চট্টগ্রাম

বোয়ালখালীতে সুঁই-সুতার যুদ্ধে দর্জি পাড়ায় বেড়েছে ব্যস্ততা

  প্রতিনিধি ২৭ মার্চ ২০২৪ , ৪:০৭:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

বোয়ালখালীতে সুঁই-সুতার যুদ্ধে দর্জি পাড়ায় বেড়েছে ব্যস্ততা

সুঁই-সুতার যুদ্ধে দর্জিদের বিরামহীনভাবে চলছে সেলাই যন্ত্রের খটখট শব্দ। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, বাড়ছে ব্যস্ততা তাঁদের। ঈদকে ঘিরে নতুন পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বোয়ালখালী উপজেলার দর্জি কারিগররা। রোজার পূর্বে থেকেই অর্ডার নেওয়া হচ্ছে। রয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পোশাক সরবরাহের চাপ।

ঈদকে সামনে রেখে আগেভাগেই নিজেদের পছন্দের জামা কাপড় বানিয়ে নিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষরা ছুটছেন এখন দর্জির দোকানে। আরো কয়েকদিন অর্ডার নেয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বোয়ালখালী উপজেলার টেইলার্সগুলোর কর্ণধাররা। বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বোয়ালখালী উপজেলার পৌর সদরের খাজা সুপার মার্কেট,জব্বার মার্কেট,আল-মদিনা সুপার মার্কেট,শাকপুরা এলাকার কাজী মার্কেট,রোকেয়া মার্কেট,চৌধুরী হাট এলাকায় চৌধুরী হাট মার্কেট,কানুগোপাড়া মার্কেট ছাড়াও বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ের গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারের দর্জির ছোটবড় প্রতিটি দোকানেই সেলাই কাজের অর্ডার পাচ্ছেন কারিগররা ।

ঈদের নতুন জামা কাপড় তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন বোয়ালখালীর দর্জি পাড়ার কারিগররা। কেউ কাপড়ের মাপ নিচ্ছেন, কেউ কাপড় কাটাচ্ছেন, কেউ আবার সেলাই করছে, কেউবা ইস্তারী করে অর্ডার বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তৈরি জামা-কাপর সাজিয়ে রাখছেন। তাদের হাতে যেন মোটেও সময় নেই, কেননা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তৈরি পোশাক সরবরাহ করতে হবে। প্রত্যেক কারিগর দিনে তৈরি করছে প্রকার ভেদে ৬ থেকে ৮টি অর্ডার করা পোশাক। পছন্দের পোশাক বানাতে দর্জির দোকানগুলোতে ভিড় করছেন শৌখিন ক্রেতারা।

বোয়ালখালীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এবার ঈদ বাজারে এসব টেইলার্সে প্রতি পিস প্যান্ট সেলাই ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, শার্ট ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, পায়জামা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, লেহেঙ্গা ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, থ্রি-পিছ প্রকারভেদ অনুযায়ী ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, জিপসি ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, ব্লাউজ, পেটিকোট ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, বাচ্চাদের পোশাক ডিজাইনের উপর নির্ভর করে নেওয়া হয় ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।

এছাড়া গর্জিয়াস সেলোয়ার কামিজের মজুরি নেয়া হয় ৮০০ থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত। তবে গত বছরের তুলনায় এবার পোশাক তৈরির মজুরি বেড়েছে বলে জানা গেছে। বোয়ালখালীর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ের গ্রাম-গঞ্জ থেকে বাজারে পোশাক নিতে আসা ক্রেতারা বলেন, আর কিছুদিন পর আমাদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ছেলে মেয়েদের নতুন পোশাক নিতে বাজারে আসছি। প্রতি বছর ঈদে আমরা দর্জির দোকানের কাপড় কিনে জামা বানাই। কিন্তু এ বছর জেন জামার কাপড়ে দাম একটু বেশি । আবার দর্জিরাও গত বছর থেকে এ বছর মজুরি একটু বেশি নিচ্ছে।

পোশাকের যে দাম আমরা কিনতে হিমশিম খাচ্ছি। আমরা যারা নিম্ন আয়ের মানুষ আছি তাদের জন্য খুবই সমস্যা। পোশাকের দাম বাড়লেও আমাদের তো আর আয় বাড়েনি। বোয়ালখালীর টেইলার্সগুলোর কর্ণধাররা বলেন,শবে বরাতের পর থেকে ক্রেতারা ঈদের পোশাকের অর্ডার দিচ্ছেন। ১৫ রমজানের পর তাদের পক্ষে আর অর্ডার নেওয়া সম্ভব হবে না। সুঁই-সুতা থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি দিয়ে কিনতে হয় বলে দাম বাড়িয়ে নিতে হচ্ছে।

এছাড়াও কারিগরদেরকে কমিশন বৃদ্ধি করতে হয়েছে। সেলাই রেটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, সবকিছুরই দাম বাড়তি রয়েছে তাই সেলাই মজুরিও একটু বেড়েছে। বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.আছহাব উদ্দিন বলেন, ঈদকে ঘিরে বোয়ালখালী উপজেলার প্রতিটি মার্কেটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেই বিষয়ে খেয়াল রাখা হচ্ছে। আমাদের পুলিশি টহল আছে। তবে তা আরও জোরদার করা হবে।

Powered by