প্রতিনিধি ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৮:০৫:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রের দক্ষিণবন্দর খালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত অপরিকল্পিত একটি স্লুইজগেট বহু বছর ধরে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করে আসছিলো।
সম্প্রতি ৪/৫ দিনের অব্যাহত ভারী বৃস্টিতে মাঠ-ঘাট ডুবে কৃষকে ও সাধারণ মানুষের ব্যপক ক্ষতি হওয়ায় বিক্ষুব্দ কৃষক ও জনতা অপরিকল্পিত ওই স্লুইজগেটটি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া শুরু করেন, যা এখন ও (শনিবার) চলমান রয়েছে। গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে কয়েক হাজার বিক্ষুব্দ কৃষক জনতা জনদুর্ভোগের স্লুইজগেটটি ভাংঙা শুরু করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুব্দ জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে তোপের মুখে পরেন। পরে ইউএনও ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর দ্বিতীয় দফায় ভুক্তভোগি জনতা ওই স্লুইজগেটটি গুড়িয়ে দেয়ার কর্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
ভুক্তভোগি এলাকাবাসির অভিযোগ, মঠবাড়িয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রের প্রবাহমান দক্ষিণ বন্দর খালের (মাছবাজার সংলগ্ন) ওপর বৃটিশ আমল থেকে একটি প্রশস্ত সেতু ছিলো। ও সেতু দিয়ে শহরের থানাপাড়া, টিকিকাটা, গুলিসাখালী এলাকার হাজার-হাজার মানুষ ও যানবাহন পারাপার হতো। মঠবাড়িয়া পৌরসভা গঠনের পর স্থানীয় পৌর প্রশাসনের অনমুতি নিয়ে পানিউন্নয়ন বোর্ড সেতুটি ভেঙে ফেলে । সেখানে একটি সংকীর্ণ পাকা স্লুইজগেট নির্মাণ করে।
ফলে যানবাহন পারাপার ও মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এমনকি ওই স্থানে সেতুর পরিবর্তে স্লুইজগেট নির্মাণ করায় শহরের খালে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে শহরের প্রাণ কেন্দ্রর প্রবাহমান খালটি ধীরে ধীরে নাব্যতা হারায়। এমন অবস্থায় শহরের প্রতিদিনের ময়লা বর্জ্য আটকে পড়ে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির সৃষ্টি করে। এছাড়া হাজার-হাজার হেক্টর জমিতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
অপর দিকে খালে সংকুচিত স্লুইজগেট নির্মাণের পর স্থানীয় প্রভাবশালীরা তার দুই পাশ অবৈধ দখল করে সেখানে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে। এমনকি শহরের খালটি নাব্যতা সংকটে পড়ায় খালের দুই তীর অবৈধ দখলদারের কব্জায় চলে যায়।
আঙুলকাটা মহল্লার বাসিন্দা শওকত খান বলেন, এই দুর্ভোগের স্লুইজগেট আমরা চাইনা।
শহরের ৯টি ওয়ার্ড, বিশেষ করে আন্ধারমানিক, ফুলঝুড়ি, ধানীসাফা, উত্তরমিঠাখালী, দক্ষিণ মিঠাখালী এলাকার কৃষকরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এ স্লুইজগেট দিয়ে পানি ওঠানামা করেনা। এখানে আগে যেমন প্রশস্ত সেতু ছিলো তেমন সেতু চাই।
এ ব্যাপারে পাউবির উপ সহকারী প্রকৌশলী মহাসিনুল ইসলাম বলেন, দ্রুত পানি নিস্কাশনের ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। পরে উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাইয়ূম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শহরের খালে সংকুচিত স্লুইজগেট জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে। ভুক্তভোগি এলাকবাসিকে আশ্বস্ত করা হয়েছে এটি দ্রুত অপসারণ করা হবে। এখানে একটি প্রশস্ত দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাবনা দ্রুত পাঠানো হবে।