দেশজুড়ে

সুপেয় পানির অভাব পূরণে পানি শোধনাগার নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ

  প্রতিনিধি ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৬:৪৬:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

সুপেয় পানির অভাব পূরণে পানি শোধনাগার নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের তিন গ্রামের মানুষের সুপেয় পানির অভাব পূরণে একটি অত্যাধুনিক পানি শোধনাগার নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। ওই ইউনিয়নের সুন্দরবন লাগোয়া বকুলতলা গ্রামে নির্মিত এই শোধনাগারটি উদ্বোধন করা হয়েছে শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে। এই পানি শোধনাগারটির ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল হাসনাত খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম, ওসি এইচ এম কামরুজ্জামান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ, কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম কালাম, শরণখোলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম।

বাংলাদেশ পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংকের (পিএলসি) অর্থায়নে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বকুলতলা গ্রামের বাসিন্দা মো. সেকান্দার ফরাজীর দানকৃত দেড় শতাংশ জমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এটি। এই পানি শোধনাগার থেকে প্রতিদিন এক হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এটি নির্মাণে সাউথখালী ইউনিয়নের বকুলতলা, শরণখোলা ও খুড়িয়াখালী এই তিন গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার সুপেয় পানির নিশ্চয়তা পেয়েছে। প্রতি লিটার ২৫ পয়সা মূল্যে এখান থেকে খাবার পানি নিতে পারবেন যে কেউ। পানি শোধনাগারটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা জমিদাতার ছেলে মো. শামীম ফরাজী বলেন, সাউথখালী ইউনিয়নে প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে বলতে গেলে সারা বছরই সুপেয় পানির সংকট থাকে।

পুলিশের পক্ষ থেকে যখন পানি শোধনাগার নির্মাণের প্রস্তাব আসে তখন আমার বাবা এলাকার পানি সংকটের কথা চিন্তা করে বিনা টাকায় জমি দান করেন। এই মহৎ কাজে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমরা অনেক খুশি। এটি যাতে ভালোভাবে পরিচালিত হয় সেদিকে আমরা সার্বিকভাবে খেয়াল রাখবো। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন খলিল বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের পানির সংকটের কথা ভেবে পানি শোধনাগারটি নির্মাণ করায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি গ্রামবাসী কৃতজ্ঞ। এটি নির্মাণে অন্তত তিদন গ্রামের মানুষের খাবার পানির দুঃখ দূর হয়েছে।

সাউথখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ বলেন, উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মধ্যে আমাদের সাউথখালী ইউনিয়ন হচ্ছে অন্যতম সুপেয় পানি সংকট এলাকা। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুম এলেই এই সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করে। সুন্দরবন খুব কাছে হওয়ায় এই এলাকাটি অত্যন্ত লবণাক্ত। পৌষ মাস থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত প্রায় ৬ মাস খাবার পানির জন্য এলাকায় হাহাকার পড়ে যায়।

বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে পানি শোধনাগারটি নির্মাণ হওয়ায় কমপক্ষে দুই হাজার পরিবার উপকৃত হবে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান সুবিধাভোগীদের উদ্দেশে বলেন, পানি শোধনাগারটি আপনাদের সম্পদ মনে করতে হবে। এটি যাতে দীর্ঘ মেয়াদি হয় সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশ আপনাদের সমস্যার কথা চিন্তা করে এটি তৈরি করে দিয়েছে। এখান থেকে নামমাত্র মূল্যে পানি পাবেন সবাই।

এ থেকে যা আয় হবে সেই টাকা শোধনাগারটির রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করা হবে। এটি যাতে ভালোভাবে পরিচালিত হয় সেজন্য শরণখোলা থানা তদারকি করবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by