বাংলাদেশ

মহামারিকালে ২৩.৫০% স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায়: নিপসম

  প্রতিনিধি ২৬ মে ২০২২ , ৮:২৯:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

মহামারি করোনাভাইরাসে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে (পিটিএসডি) আক্রান্ত হয়েছেন বলে উঠে এসেছে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান –নিপসমের গবেষণায়।

গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত বিবাহিত স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশী মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নিপসম মিলনায়তনে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেন নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্থায়নে এই গবেষণা পরিচালনা করে নিপসম। অধ্যাপক রিয়াজ এই গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেন।

গবেষণার শিরোনাম ‘বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারীকালে স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর এর মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব, কুশলাবস্থা, সংশ্লিষ্ট ফ্যাক্টরসমূহ এবং মানিয়ে নেবার কৌশল’। ১ হাজার ৩৯৪ জন স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর পরিচালিত গবেষণাটি শুরু ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে; শেষ হয় জুনে।

৫৯৬ জন চিকিৎসক, ৭১৩ জন নার্স এবং ৮৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর পরিচালিত হয় নিপসমের গবেষণাটি।

গবেষণায় বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের মধ্যে চিকিৎসকরাই বেশি পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে (পিটিএসডি) ভুগেছেন। এরপরেই ছিলেন টেকনোলজিস্ট ও নার্স। টেকনোলজিস্টদের মধ্যে এই হার ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং নার্সদের মধ্যে হার ২২ দশমিক ৮০ শতাংশ।

যাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশেরই পিটিএসডি ছিল। তাদের মধে ৮৩ দশমিক ৬ শতাংশ ছিলেন বিবাহিত। এই ৮৩ শতাংশের মধ্যে নারীদের পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি) ঝুঁকি ছিল বেশি।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের কাজের চাপ অনেক বেশি ছিল। তারা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রীর (পিপিই) অপ্রতুলতায় ছিলেন এবং করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিলেন।

গবেষণা দলের প্রধান ও নিপসমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ বলেন, পিটিএসডি আক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা পেশাদাররা সবার থেকে দূরে সরে থাকতে পারেন বা চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন। তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা থাকতে পারে।

জরিপের গবেষণায় স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের মানসিক সুস্থতায় কাউন্সেলিং প্রোগ্রামের ব্যবস্থা জোরদার ও প্রবর্তনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল। আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ,স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন।

শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন,  বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোর্সের সময় ভিন্নটা দেখা যায়। একই কোর্স এমপিএইচ কোথাও ৬ মাস, কোথাও ৯ মাস, কোথাও ১২ মাস আবার কোথাও ১৮ মাস। ফলে সময় নিয়ে জটিলা সৃষ্টি হয়ে থাকে। এ জটিলতা দূর করতে হলে সকল স্বাস্থ্যসেবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এই এমপিএইচ কোর্সকে ২ বছর মেয়াদী করতে হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by