প্রতিনিধি ১৫ মার্চ ২০২৫ , ৮:০৪:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আলোচিত ডাকাতি ও হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ও শনিবার (১৪ ও ১৫) বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া ২৪ হাজার ১ শত টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কোটালীপাড়া উপজেলার চৌরখালী গ্রামের আতা শেখের ছেলে সামিউল শেখ, পার্শ্ববর্তী তিলবাড়ী গ্রামের সোহরাব খানের ছেলে মোরশেদ আলম ওরফে কামাল ও একই উপজেলার শওকত আলী ভূইয়া। খুনিরা জেনে বুঝেই এর আগে উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের লাখিরপাড় গ্রামের দন্তচিকিৎসক পল মজুমদারের বাড়িতে গত ৮ ও ১০ তারিখে ঘটনা ঘটনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে ১১ মার্চ (মঙ্গলবার) দুপুরে ডাকাতির ঘটনা ঘটাতে সক্ষম হয়। ডাকাতির সময় পল মজুমদারদের ছেলে পিয়াস মজুমদারকে হাত পা বেঁধে হত্যা করে রেখে যায় ডাকাত দল। এ ঘটনায় ওইদিনই নিহতের পিতা পল মজুমদার নিজে বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় একটি হত্যা ও ডাকাতি মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শনিবার (১৫ মার্চ) বেলা ৩ টায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, বাদী পল মজুমদার ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে ঘরে রেখেছিলেন।
এ খবর গ্রেফতারকৃতরা কোন একভাবে জেনে যায়। ঘটনার দিন পল মজুমদার ও তার স্ত্রী তাদের কর্মস্থলে গেলে দুপুরের দিকে আসামীরা পাঁচজনে মিলে প্রথমে বাড়িতে প্রবেশ করে। ঘরে ঢুকে লুট করার সময় পল মজুমদারের ছেলে দেখে ফেলায় তাকে প্রথম হাত পা বেঁধে ফেলে। পরে লোক জানাজানি হয়ে যাবে এই ভয়ে তাকে হত্যা করা হয়। পরে ঘর থেকে ১ লক্ষ ৯ হাজার টাকা লুট করা হয়। এ ঘটনার পর পুলিশের একটি টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য অভিযানে নামে। ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ১২ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের খান মার্কেট এলাকা থেকে মোর্শেদ আলম ওরফে কামালকে গ্রেফতার করে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারই দেওয়া তথ্যমতে অপর আসামি সামিউল শেখকে বাগেরহাটের কচুয়া থানার কামারগাতী এলাকা থেকে ও আরেক আসামি শওকত আলী ভুঁইয়াকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় আসামিদের কাছ থেকে নগদ ২৪ হাজার ১ শত টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, গ্রেফতারের পর আসামীরা জানিয়েছেন তারা কেউ মাদকাসক্ত আবার কেউ ঋণগ্রস্ত। মূলত মাদক ও ঋণের টাকা জোগাড় করতেই তারা এই ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। ডাকাতিকালে ঘর থেকে নগদ ১ লক্ষ ৯ হাজার টাকা ছাড়াও একটি রুপার চেইন তারা লুট করেছে। ঘটনার সময় আসামীরা ৫ জন ছিলেন বলে তারা স্বীকার করেছেন। আমরা এখন পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছি। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) কাজী মাহবুবুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সরোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সালেহ আহমেদ, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান, কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ সহ জেলায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।