ঢাকা

রূপগঞ্জে ভূলতা ফ্লাইওভার ময়লার ভাগাড়

  প্রতিনিধি ৫ নভেম্বর ২০২২ , ৭:১৮:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ

মোঃশাহিন, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
ভুলতা ফ্লাইওভারের নীচে যেন ময়লার ভাগাড়। স্থানে স্থানে ময়লার স্তুপ। পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পথচারীরা চলতে কষ্ট হচ্ছে। অনেকে দুর্গন্ধে নাকে রুমান চাপছেন। এরই মাঝে রাতে অধারে মাদকসেবীরা ময়লায় আগুন ধরিয়ে মাদক সেবন করছে দেদারছে। মাদকসেবীদেও জন্য নিরাপদ হলেও আগুন ফ্লাইওভারের জন্য ক্ষতিকর বলে জানান পথচারীরা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে আগে সময় লাগত কয়েক ঘণ্টা। নিত্যদিনের যানজট ভোগান্তি থেকে এ রুটে যাতায়াতকারীদের মুক্তি দিতে নির্মাণ করা হয় উড়াল সড়ক। এরপর থেকে যানজট ছাড়াই মাত্র দুই মিনিটে এ রুটের গাড়িগুলো ভুলতার অংশ পাড়ি দিচ্ছে।
তবে সড়কটি খুলে দেয়ার কিছুদিন পরই এর আশপাশের চিত্র বদলাতে থাকে। এর নিচের প্রায় ১ দশমিক ২৩৮ কিলোমিটার অংশ এখন ভাগাড়, যা রূপগঞ্জবাসীকে নতুন দুর্ভোগে ফেলছে। আর ওপরের অংশ পরিণত হয়েছে ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা আর মাদকসেবীদের আখড়ায়। এতে উড়াল সড়ক এলাকাটি এখন যাত্রীদের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা ও গোলাকান্দাইল দিয়ে সামনে গেলেই ঢাকা-বাইপাস সড়কের সংযোগস্থল। দেশের উত্তরাঞ্চলের সব মালবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ ভূলতায় মানুষের আনাগোনা অনেক বেশি। দেশের পাইকারি কাপড়ের মার্কেট গাউছিয়াও এখানে। ব্যবসায়ীরা এখান থেকে কাপড় নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করেন।
২০১৫ সালের অক্টোবরে ভুলতা-গোলাকান্দাইল চত্বরের ব্যাপক যানজট নিরসনে উড়াল সড়ক নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। কাজের দীর্ঘসূত্রিতায় এ প্রকল্পের খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। উদ্বোধন করা হয় ২০২০ সালের অক্টোবরে। উদ্বোধনের পর বেশ কয়েক মাস সড়কটি ভালো থাকলেও এরপরই শুরু হয় অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা। নষ্ট হয়ে পড়ে সেতুর ল্যাম্পপোস্টগুলোও।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর ল্যাম্পপোস্টগুলো না জ্বলায় সন্ধ্যার পরপরই সেতুর ওপরে নেমে আসে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আর এই অন্ধকারে সড়কের ওপরে চলে ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা ও মাদকসেবীদের আড্ডা। উড়াল সড়ক এলাকায় নেই কোনো সিসি ক্যামেরাও।
এ বিষয়ে গোলাকান্দাইল এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, সন্ধ্যার পর ভয়ে কেউ সেতুর ওপর যানবাহন থামাতে চায় না। প্রায়ই ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে এখানে। মাদকসেবীরাও আড্ডা জমায়।
এদিকে সেতুর নিচের অংশে ময়লার ভাগাড় হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের মাঝখানে ও দুই পাশে কাঁচাবাজার, ফলের আড়ত ও মাছের বাজার রয়েছে। এসব কাঁচাবাজার আর ফলের আড়তের ময়লা ফেলা হচ্ছে উড়াল সেতুর নিচে।
কথা হয় ফল বিক্রেতা রজব আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নেই। তাই পাশেই সড়কের নিচে ময়লা ফেলেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন পথচারী আমির হোসেন। বলেন, কয়েকশ কোটি টাকা ব্যয়ে উড়াল সড়ক করা হয়েছে যানজটের নিরসনের জন্য। এখন উড়াল সড়ক আতঙ্ক আর দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। সেতুর নিচ দিয়ে চলতে গেলে নাক চেপে চলতে হয়।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। উড়াল সড়কের নিচের ভাগাড় শিগগিরই অপসারণ করা হবে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, উড়াল সড়ক এলাকায় একটা সময় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটত। কয়েকজন ছিনতাইকারী গ্রেপ্তারের পর থেকে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল হক বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছেখুব শীগ্রই সরানো হবে

আরও খবর

Sponsered content

Powered by