প্রতিনিধি ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৩:১৮:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
ঋতুর রানি শীতের আগমনে প্রকৃতির স্বরূপ পরিবর্তন মুগ্ধ করে সকলকে। শীতের আগমনে পাহাড়ের জীবপ্রকৃতির মাঝে এসেছে পরিবর্তন।
গত একসপ্তাহে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে শীতের আমেজ উপলব্ধি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে গত এক সপ্তাহে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গড়ে ১৫ ডিঃ সেঃ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল।
শীতকে উপলক্ষ করে বছরের এই সময়টাতে পর্যটন নগরী বান্দরবানে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে,যান্ত্রিক কর্মব্যস্ত শহরের কোলাহল ছেড়ে খানিকটা প্রশান্তির আশায় পরিবার পরিজন,বন্ধু বান্ধব নিয়ে অনেকেই ছুটে আশেন পাহাড় কণ্যা বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করতে।
কুয়াশা ঘেরা উঁচু উঁচু পাহাড়,ঝর্ণা,দর্শনীয় পর্যটন স্পষ্ট, নানা ভাষাভাষী ১১ টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের জনসাধারণের বৈচিত্র্যময় জীবনযাত্রা,তাদের হাতে তৈরী বিভিন্ন নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র এই সবই মুগ্ধ করে আগত পর্যটকদের।
বিগত কয়েক বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অভ্যন্তরীন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোস্টি গুলোর অপতৎপরতা,সন্ত্রাস বিরোধী যৌথ অভিযানের কারনে নিরাপত্তার স্বার্থে জেলায় পর্যটক ভ্রমণের উপর বিধিনিষেধ আরোপ ছিলো বছর জুড়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়।
দীর্ঘদিন পর গত নভেম্বর মাসে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি এই তিনটি উপজেলার পর্যটন স্পষ্ট গুলোতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা সহ পর্যটক ভ্রমণের বিষয়ে বিধিনিষেধ বহাল রেখে প্রাথমিকভাবে জেলা সদর,লামা,আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেয় জেলা প্রশাসন।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে বান্দরবানে ঘুরতে আশা অমিত রায় দম্পতি বলেন বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেক সুন্দর,এটা বাংলাদেশের ভূসর্গ,তিনি বলেন জেলা শহর থেকে দুরের উপজেলা গুলোতে যেতে পারলে ভালো লাগতো,ভ্রমনে বিধিনিষেধ পর্যটন ও পর্যটকদের উপর প্রভাব পড়ে।
ঘুরতে আশা পর্যটক রিফাত জানালেন ২০১৫ সালে একবার বান্দরবান এসেছিলাম,আবার প্রকৃতির প্রেমে ছুটে আসলাম,প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মুগ্ধতা আবার উপভোগ করতে,তিনি বলেন সরকারের প্রতি অনুরোধ যত দ্রুত সম্ভব অভ্যন্তরীন সমস্যাগুলো সমাধান করে আবারো পর্যটকরা যেনো বন্ধ উপজেলা গুলোতে ভ্রমণের সুযোগ পায় সেই ব্যবস্থা নেয়া।
হোটেল গ্রীন পিক রিসোর্টের ম্যানেজার নাহিদ বলেন এখন পর্যটন মৌসুম, এই মৌসুমে যে পরিমান পর্যটক থাকার কথা, সে রকম পর্যটক উপস্থিতি আশানুরূপ হচ্ছে না,বিশেষ করে জেলার রুমা,থানচি,রোয়াংছড়ি উপজেলার দর্শনীয় পর্যটন স্পষ্ট গুলোতে পর্যটকরা যেতে পারছে না যার কারনে এই মৌসুমে জেলায় পর্যটক উপস্থিতি আশানুরূপ না।তিনি বলেন প্রশাসন যদি পর্যটন স্পষ্ট গুলো খুলে দেয় সামনে পর্যটক আরো বারবে।
তিন উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণের বিধিনিষেধের কারনে জেলায় আগত পর্যটকদের মনে কিছুটা অসন্তোষ থাকলেও নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই।
জেলা আবাসিক হোটেল রিসোর্ট ওয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন এর দেয়া তথ্য মতে আশানুরূপ পর্যটক ভ্রমণ না থাকায় এই সেক্টরে প্রতিমাসে লোকসান হচ্ছে হাজার কোটি টাকা।সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে পাহাড়ে সম্প্রীতি ফিরে আসবে, আবার প্রাণচঞ্চলতা ফিরবে পর্যটনশিল্পে এমনটাই আশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।