বরিশাল

সর্বনাশী মেঘনা আর দারিদ্র্যের কষাঘাতে থমকে গেছে মাইনুর, রাবেয়াদের জীবনতরী

  প্রতিনিধি ৪ জানুয়ারি ২০২১ , ৩:২৯:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

চপল রায়, ভোলা:

প্রমত্তা মেঘনার কোল ছুঁয়ে আবহমান বাংলার এক জেলেপল্লী হাজিপাড়া। এখানেই শ্যামল শান্তির নীড় ছিল মাইনুরদের। বছর কয়েক পূর্বে এ গ্রামের দালাল বাড়িতে দু বেলা দু মূঠো খেয়ে আর দুরন্ত শিশুদের উচ্ছল হাসি-আনন্দে কেটে যেত দিন।

দু’বছর আগে মেঘনার কড়াল গ্রাসে শেষ সম্বল ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় তারা। অনেক কষ্টে ধার দেনা করে বেড়িবাঁধের ঢালে আশ্রয় নেয় মাইনুরদের পরিবার। এর পর থেকে দাদন নিয়ে অন্যের নৌকায় জাল বেয়ে মাছ ধরে কোনরকমে সংসার চালাতো মাইনুরের স্বামী রহমান। নিয়তির কি নির্মম পরিহাস গত একবছর ধরে কিডনির রোগে অচল হয়ে যায় সাতজনের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এই রহমান। অনাহারে অর্ধাহারে শিশুদের জীর্ণশীর্ণ মলিন চেহারা যেন বুঝিয়ে দেয় তাদের ছোট ছোট দৃষ্টির আড়ালে লুকিয়ে থাকা ক্ষুধা বঞ্চনার বিশালতাকে।

মাইনুরের মত অনিতা আর রাবেয়ার সংসারেও জেঁকে বসেছে দারিদ্রতা। মেঘনার ভাঙনে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে সন্তানদের মুখে দু’বেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দেয়া যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া।

এদিকে বিয়ের রঙিন কাপড়ের রঙ মুছতে না মুছতেই পনেরো বছর আগেই শিপ্রা ও তার সদ্যোজাত কন্যাকে ফেলে নিরুদ্দেশ হয় তার স্বামী। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে মায়ের ভিটাতে আশ্রয় নেয় সে। অন্যের বাড়িতে খেটে মা আর মেয়ের মুখে ভাত তুলে দিতে সঙ্গী করেছে দুঃখ আর ক্লান্তিকে।

দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে গতিশীল তখন মাইনুর, রাবেয়া, অনিতা আর শিপ্রাদের দু’বেলা দুমুঠো খাওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কি এগিয়ে আসবেন সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা, না কি সে স্বপ্ন শুধু স্বপ্ন হয়েই রবে?

আরও খবর

Sponsered content

Powered by