প্রতিনিধি ৯ জুন ২০২৪ , ৪:১৫:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
আর মাত্র ৮দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। পশু কোরবানিতে সাধারণত দা, বটি ও ছুরি না হলেই নয়। পশু কোরবানিতে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি শান দেওয়া ও তৈরিতে সাভার-আশুলিয়ায় কামারদের বাড়তে শুরু করেছে ব্যস্ততা।
একদিকে কোরবানির পশু কেনায় ব্যস্ত হতে শুরু করেছে সচ্ছল পরিবারগুলো, অন্যদিকে প্রায় কয়েকগুণ বেশি সমানুপাতিক হারেই দা, বটি, ছুরি কিংবা কোরবানি পশু কাবু করার অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ততা বাড়তে শুরু করেছে কামারদের মাঝে।রোববার সকালে সাভার ও আশুলিয়ার কামার পট্রি এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে টুং-টাং শব্দে মুখরিত হওয়ার এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
কামার পট্রিতে বেশ কয়েকটি কামার দোকানে ঘুরে দেখা গেছে আগের তুলনায় কাজ বেড়েছে কামারদের। অথচ সারা বছরই তাদের কাটে অলস সময়।মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে সাভার উপজেলাতে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার জন্য উপকরণ দা-ছুরি-চাপাতি কিনতে কামারের দোকানেও বাড়তে শুরু করেছে ক্রেতাদের ভিড়।
আর এ সকল উপকরণ তৈরি করতে নাওয়া খাওয়া ভুলে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তারা। তবে কয়লার দাম বেশি হওয়ায় অন্যবারের চেয়ে এবারে দা-বঁটি, ছুরি ও চাপাতির দাম কিছুটা বেশি বলেও জানা জানায় তারা।পশু কোরবানিতে দা-বটিঁ, চাপাতি ও ছুরি অতীব প্রয়োজনীয়। নতুন তৈরির সঙ্গে শহর ও গ্রাম-গঞ্জে সব জায়গায় কামাররা ব্যস্ত পুরোনো দা-বটি, ছুরি ও চাপাতিতে শাণ দিতে। আবার মোটরচালিত মেশিনে শান দেয়ার কাজও চলছে। তাই যেন দম ফেলারও সময় নেই কামারদের। তবে সাভার উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন কামাররা।
কোরবানিদাতারা কোরবানির পশু কাটা-ছেঁড়া করার জন্যে পরিবারের ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত দা-বটি ও ছুরি শান দেয়ার জন্যে নিয়ে আসছে কামারদের কাছে। এর ফলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কামারদের বিরামহীন ব্যস্ততা। অন্য সময়ের চেয়ে দোকানে মৌসুমি কর্মচারীর সংখ্যাও বেড়েছে। আশুলিয়ার নরসিংহপুর দা-বটি শান দিতে আসা মুকুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, দুই বছর ধরে আমি দা-বটি শান দেই না। ঝং ধরেছে ধারও একটু কমে গেছে এই জন্য একটু আগেভাগে শান দিতে আসলাম।
আর কয়েকদিন পরে কোরবানি আরও নিকটে চলে আসবে এতে কামারেরা আরও ব্যস্ত হয়ে পড়বে। কর্মকাররা জানান, সাধারণত স্প্রিং লোহা ও কাঁচা লোহা ব্যবহার করে দা-বটিঁ ও ছুরি তৈরি করা হয়। স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামও বেশি। আর কাঁচা লোহার তৈরি উপকরণগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে কম।
এ ছাড়াও লোহার মানভেদে স্প্রিং লোহা ৫০০ টাকা, নরমাল ৩০০ টাকা, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১০০ থেকে ২০০, দা ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, বঁটি ২০০ থেকে ৪০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে শুরু, চাপাতি ৫০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।
আশুলিয়ার অধিকাংশ কর্মকাররা অভিযোগ করে বলেন, সাভার উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছেন না তারা। এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রাহুল চন্দ বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষুদ্র শিল্প বিনিয়োগ ও প্রসারের জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কামার শিল্পের সাথে জড়িত যারা আছেন তাদের কর্ম ব্যস্তত বেড়ে যায় দ্বিগুণ। ইতোমধ্যেই সাভারের কামার শিল্পীদের সাথে আলোচনা করাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হয়েছে।