প্রতিনিধি ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৭:৫৭:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট সেন্ট্রাল পার্ক হসপিটাল এন্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে ভূল চিকিৎসার অভিযাগ উঠা মুনী আক্তার (৩০) নামের প্রসূতি মা মারা গেছেন। রবিবার চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্হায় তিনি মত্যুবরণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহতের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ হাসান।
জানা গেছে, প্রসব বেদনা উঠলে রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ফটিকছড়ির নাজিরহাট সেন্ট্রাল পার্ক হাসপাতালে নেওয়া হয় উপজলার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের গৃহবধূ মুনি আকতারকে। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা দেন। রবিবার রাতে পুত্র সন্তানের মা হন মুনি আকতার। অস্ত্রাপাচার ভূল হওয়ায় প্রসূতি গুরুতর অসুস্হ হয়ে পড়ে। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রসূতিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন।
চমেক হাসপাতালে দুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মুনি আকতারের শারীরিক অবস্হার অবনতি ঘটলে পরিবারের লোকজন সেন্ট্রাল পার্ক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযাগ তুলেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যেম প্রচারিত হওয়ার পর একদল বিক্ষুব্ধ জনতা সেন্ট্রাল পার্ক হাসপাতালে হামলা চালায়।
এ সময় হাসপাতালের কাচ, আসবাবপত্র এবং দরজা-জানালা ভাঙচুর করা হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হাসপাতালের চিকিৎসক এবং কর্মচারীরা আত্মগোপনে চলে যান। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এসিল্যান্ড এবং থানা পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। পরবর্তী ওই রোগী চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এ অভিযাগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মাহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।তদন্ত কমিটির সভাপতি হলেন উপজলা স্বাস্হ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম, সদস্য সচিব ডা. মনীষ সাহা রায়, সদস্য ডা. শামীমা আক্তার ও ডা. রানা দে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৭ দিনর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
গহবধূ মুনি আকতার মামা মো. হাসেম বলেন, সেন্ট্রাল পার্ক হসপিটালে আমার ভাগিনী মুনির ভুল চিকিৎসা বা ভুল অস্ত্রাপাচার করা হয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যেমে এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই, যাতে অন্য কেউ এমন পরিস্হিতির শিকার না হয়।
উপজলা স্বাস্হ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম বলেন, তদন্ত কমিটি তদন্ত পূর্বক ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। তবে হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সকলে পালাতক। জানাযা শেষে আমরা নিহত মহিলার পরিবারের সাথে বসে কথা বলে আমাদের তদন্ত এগিয়ে নেব।
উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন , ঘটনার সত্যতা উদঘাটনের জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যেমে আসল ঘটনা উন্মোচন করা হবে।
জানা যায়, নিহত মুনী আক্তারের ৩টি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত রোববার ওই হাসপাতালে সিজারের মাধ্যেমে তার আরো একটি ছেলে সন্তান হয়। কিছুদিন পূর্বে তার স্বামী অসুস্হ হয়ে মারা যান। মুনী ফটিকছড়ি পৌরসভা ২নং ওয়ার্ডের জামাল বেপারির বাড়ির মৃত মোহাম্মদ ফোরকানের স্ত্রী।