প্রতিনিধি ২৭ মে ২০২৪ , ৪:১২:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর জলদী মিনজিরতলা গ্রামের বয়নাকাটা এলাকার প্রায় দুইশতাধিক পরিবার বৃষ্টির পানিতে বন্দি অবস্থায় জীবন-যাপন করছেন। ভাদালিয়া ছড়া থেকে জলকদরখাল পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার দূরত্বের বহদ্দার খালটি বয়নাকাটা এলাকা দিয়ে বহমান। প্রায় দুইশত বছরের পুরানো পানি নিষ্কাশনের খালটি সম্প্রতি রাসেল চৌধুরী নামক স্থানীয় একজন ব্যক্তি ভরাট করে দোকানঘর নির্মানের অভিযোগ উঠে। এতে বৃষ্টি হলেই পানি চলাচল ব্যাহত হয়ে ডুবে যায় রাস্তা-ঘাট।
সোমবার (২৭ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বাঁশখালীতে টানা বারীবর্ষণ হয়। ব্যাপক বারীবর্ষণের ফলে এতে পানি চলাচলের পথ বন্ধ থাকায় বয়নাকাটা এলাকার লোকজনের চলাচলের প্রধান সড়ক মরহুম আব্দুল হাকীম সড়কটির প্রায় ৮শত ফুট দূরত্বের অংশ হাঁটু পানিতে ডুবে যায়। এতে জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে প্রায় দুইশো বাড়ি-ঘর। ডুবে যায় অনেকের ব্যবহারের পুকুর। এতে স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থী ও সাধারণের চলাচলে যেমন ব্যাহত হয়েছে, তেমনি পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে দুই শতাধিক পরিবার।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বর্ষা মৌসুমে উপজেলার সরল ইউনিয়নের ভাদালিয়া ছড়া থেকে পশ্চিমে জলকদর খাল পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণ লম্বা-লম্বিভাবে বয়নাকাটা এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত বহদ্দার খাল দিয়ে বৃষ্টির পানি অপসারিত হয়ে আসছে প্রায় দুইশো বছর ধরে। বয়নাকাটা এলাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে অপরিকল্পিতভাবে স্থানীয় রাসেল চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি চাঁদ মিয়া মার্কেট এলাকায় দোকানঘর নির্মাণ করার পর থেকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে বয়নাকাটা এলাকার যোগাযোগের একমাত্র সড়কটি। পানিবন্ধি হয়ে পড়ে এলাকার কয়েক হাজার লোকজন।
স্থানীয় মাস্টার মো. হোছাইন, আহমদ ছগির তালুকদার, সাবেক ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ সহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ‘বহুবছর পুরানো খালটি ভরাট করে দোকান ঘর নিমার্ণের সময় এলাকাবাসী বাঁধা দিলেও, সে বাঁধা উপেক্ষা করে দোকানঘর নির্মাণ করে। এতে পানি চলাচলের একমাত্র পথটি বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে টানা বর্ষণে তলিয়ে যায় গ্রামিণ সড়কটিও। পানিবন্ধি হয়ে পড়ে দুইশোর অধিক পরিবার। এতে করে বিভিন্ন স্কুল, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের চলাচল, সর্বসাধারণের মসজিদ ও হাঁটবাজারে চলাচল ব্যাহত হয়ে পড়ে। এভাবে পানি চলাচলের পথ বন্ধ থাকলে পুরো এলাকটি পানির নীচে তলিয়ে যাবে।
অভিযুক্ত রাসেল চৌধুরীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘তারা পানি চলাচলের যে পথের কথা বলছে ওটা আমার কেনা জায়গা। এখানে পানি চলাচলের কোন পথ ছিল না। তাছাড়া এখানে আমি দোকানঘর নির্মাণ করেছি।’ দোকানঘর নির্মাণের ফলেই পানি চলাচল বন্ধ হয়েছে দাবী করছে এলাকাবাসী এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এলাকাবাসী আমার দোকানের উত্তর দিকের অংশে চাইলে তারা পানি চলাচলের ব্যবস্থা করে নিতে পারেন। আমি পানি চলাচলের পথ বন্ধ করার লোক না।’
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে সরল ইউপি চেয়ারম্যানকে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘অতিবৃষ্টির ফলে পানি চলাচলের পথ বন্ধ থাকায় বয়নাকাটা এলাকার অধিকাংশ পরিবার পানিবন্ধি হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। যে লোকটির বিরুদ্ধে পানি চলাচলের দীর্ঘদিনের খালটি ভরাট করছে বলে অভিযোগ আসছে, সে তার জায়গা বলে দাবী করলেও আমি পানি চলাচলের জন্য ব্যবস্থা করতে বলেছি তাকে। প্রয়োজনে খরচ যা লাগে আমি দেব। আমি এখন একটি জানাযার মাঠে আছি এমনটি বলে ফোন কেটে দেন তিনি।’