দেশজুড়ে

সিংড়ায় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

  প্রতিনিধি ১৩ জুলাই ২০২৪ , ৮:০১:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

সিংড়ায় নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত কারিগররা

চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়ার নিম্নাঞ্চল এখন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। দিন দিন বাড়ছে এ পানি। বর্ষা ঋতুর আগমণে তাই নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা।

দিনরাত এক করে নৌকা তৈরি করছেন তারা। নতুন নৌকার পাশাপাশি অনেকে আবার পুরাতন নৌকা মেরামতের জন্য ছুটছেন তাদের কাছে। সিংড়া উপজেলায় বর্ষাকালে চলনবিল ও আত্রাই নদীতে জেলেরা মাছ শিকার করে থাকেন। তাই এ সময় ব্যাপকভাবে নৌকার প্রয়োজন দেখা দেয়।

বছরের আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস থেকে কার্তিক পর্যন্ত ৩ থেকে ৪ মাস বন্যা কবলিত এই অঞ্চলের বেশিরভাগ গ্রাম ও পথ-ঘাট যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এসময় এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাতায়াত, হাট-বাজার ও মাছ ধরার কাজে একমাত্র বাহন হয় নৌকা। তাই বর্ষাকালে বেড়ে যায় নৌকার কদর।

যারা জেলে পেশায় রয়েছেন, তারা এখনই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ কারণে চলনবিলাঞ্চলে নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে। আর নদীর আশপাশের এলাকার কেউ কেউ পুরনো নৌকায় লাগাচ্ছেন আলকাতরা আবার কেউ বা দিচ্ছেন জোড়াতালি। কেউ কেউ তারকাঁটা ও লোহার পাত দিয়ে তক্তা জোড়া লাগানোর কাজে ব্যস্ত।

সরেজমিনে উপজেলার বিলদহর, কালিনগর, শেরকোল, তাজপুর, সাঁতপুকুরিয়া, বড়িয়া, ডাহিয়া ও বিয়াশ বাজার ঘুরে দেখা যায় নৌকা তৈরির কারিগররা নতুন নৌকা তৈরি ও পুরাতন নৌকা মেরামত কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কারিগররা বলছেন, নৌকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামের দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

সাঁতপুকুরিয়া বাজারে তিনটি পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজ করছেন রফাত নামের এক কাঠমিস্ত্রি। তিনি জানান, সারা বছর কাঠের কাজ করেন। বর্ষার এই সময়ে নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন। এতে তার বাড়তি কিছু আয় হয়।

বিয়াশ বাজারে নৌকা তৈরির কারখানার মালিক গোদা কুমার জানান, আমরা অর্ডার নিয়ে নৌকা তৈরি করছি। আমার কারখানায় ৫ জন কারিগর আছে। ‘কড়ই, হিজল ও মেহগনির কাঠ দিয়ে বেশিরভাগ নৌকা তৈরি করি।

এছাড়া আলকাতরা, বাঁশ, তারকাঁটাসহ বিভিন্ন উপকরণ লাগে। এ বছর ৭০টি নতুন নৌকা তৈরি করেছি। বেশিরভাগ ছোট ডিঙি নৌকা যার অধিকাংশই মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করা হয়।তিনি আরও জানান, আকার ভেদে ছোট ডিঙি নৌকা তৈরির মজুরি হিসেবে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা নেই। কাঠসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নৌকার মালিক দেন।

কাঠের গুনগত মান ও আকৃতি বুঝে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা করে প্রতিটি নৌকার খরচ পড়ছে। এ বছর আরো ১০টি নতুন নৌকার অর্ডার পেয়েছি। কাঠ, লোহাসহ অন্যান্য সরঞ্জামের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের চেয়ে খরচ বেশি লাগছে।

নৌকা কিনতে আসা সোহেল রানা বলেন, আমাদের গ্রামটি চলনবিলের মাঝখানে। সামান্য বর্ষাতেই রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। বর্ষার সময় একমাত্র বাহন হচ্ছে নৌকা।

বন্যার পানি নদী দিয়ে খাল-বিলে ঢুকতে শুরু করছে। তাই নৌকা কিনতে এসেছি। তবে এ বছর নৌকার দাম একটু বেশি।

আরও খবর

Sponsered content