ঢাকা

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত; যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন রেজাউল মুন্সি

  প্রতিনিধি ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৭:৩০:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত; যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন রেজাউল মুন্সি

রেজাউল মুন্সি (৪৪)। পেশায় একজন সাধারণ কবিরাজ। কবিরাজি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। এক ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে সংসার। মেয়ে একজন বিয়ে দিয়েছেন বাকী দুই জন বাসায় থাকেন। স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়েই বসবাস করেন তিনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বেশ কয়েকদিন আগে কোটা আন্দোলন চলাকালে পুলিশের রাবার বোলেটের গুলি আর টিয়ার গ্যাসের আগুনে দগ্ধ রেজাউল মুন্সি এখন জ্বালা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। ঠিক মত কিনতে পারছেন না ওষুধ। 

আহত রেজাউল মুন্সি গাইবান্ধা সদর উপজেলার খামার গবিন্দপুর গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে। তিনি ঢাকার আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকার নাসিরের ভাড়া বাড়িতে থেকে কবিরাজি করে থাকেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত রেজাউল মুন্সি জানান, কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি মনের তাড়নায় আশুলিয়া থেকে যাত্রাবাড়ি এলাকায় গিয়ে আন্দোলনে যোগ দেন। তার সাথে আরো অনেকেই সেদিন আন্দোলনে যোগ দেন। আন্দোলন চলাকালে তিনি অপরিচিত কয়েকজনের সাথেই ছিলেন। এসময় হঠাৎ পুলিশ গুলি ছুড়তে থাকে। পরে একটা গুলি তার পায়ের গুড়ালিতে এসে বিদ্ধ হয় এবং কাদানে গ্যাসের কৌটা এসে তার দুই পায়ের পিছনে পড়লে তার পাঞ্জাবি এবং পায়জামাতে আগুন ধরে যায়। পরে দুই পায়ের রানের চিপায় ডান পায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

রেজাউল মুন্সি বলেন, সেদিন আহত হয়ে বেশ কিছু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে কেউ চিকিৎসা করেনি। পরে পায়ে হেঁটে অতি কষ্টে আশুলিয়ার জিরানী বাজার এসে বাংলাদেশ কোরিয়া মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তার সাথে অপরিচিত আরেকটি ছেলের সেদিন পায়ে গুলি লাগে। তার অবস্থা পরে কি হয়েছে বলতে পারেননি। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে এখন তিনি মোটামুটি সুস্থ। তবে পায়ের যন্ত্রণা এবং জ্বালাপোড়া তাকে ভীষণ ভোগাচ্ছে। ঔষধ কেনা বাবদ অনেক টাকা এরই মধ্যে খরচ হয়ে গেছে। প্রতিদিন ওষুধ খেতে হয়। দিনে যেমন তেমন ভালই থাকেন তিনি, কিন্তু রাত হলেই যন্ত্রণায় কাতরাতে হয়। ঘুমাতে পারেন না।

রেজাউল করিম ওইদিনের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে বলেন, আহত অবস্থায় এলাকায় আসলে স্থানীয়রা তাকে নানান ধরনের ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। পুলিশের ভয় দেখান অনেকেই। অনেকটা লুকিয়েই চিকিৎসা করিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, যেদিন ৫ই আগস্ট দেশ দ্বিতীয় বারের মত স্বাধীন হল সেদিনের মত ভাল কোন দিন লাগেনি। অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করেছিল সেদিন। কারণ তিনি যেদিন আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন, সেদিন নিশ্চিত মৃত্যুকে হাতে নিয়েই যোগ দিয়েছিলেন বলে যোগ করেন তিনি। 

বর্তমানে অনেকটা কষ্টেই দিন কাটাচ্ছেন রেজাউল মুন্সী। কবিরাজি করে যা পান, তা দিয়েই চলেন তিনি। ওষধ কেনারও টাকা মাঝে মধ্যে থাকে না।

আরও খবর

Sponsered content