প্রতিনিধি ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৫:১২:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
লক্ষাধিক মানুষের জীবনের দূর্ভোগ কমাতে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের পেরুয়া নদীর উপর নির্মাণ করা প্রয়োজন একটি মাত্র সেতু। একটি মাত্র সেতুই নদীর দুই পাড়ে বসবাস করা ২৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে পারে ও পরিবর্তন করতে পারে লক্ষাধিক মানুষের জীবনমান।
স্থানীয়রা দীর্ঘদিন সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও আজও নির্মাণ হয়নি জগনাথগঞ্জ ঘাট এলাকায় পেরুয়া নদীর সেতুটি। ফলে নদীর পশ্চিম পাড়ের লোকজনের যাতায়াত ও পন্য পরিবহনের জন্য পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। এই চরম দুর্ভোগ হতে মুক্তি পেতে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সরিষাবাড়ী উপজেলা এবং সীমান্তবর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার দুই পাড়ের কয়েক লক্ষ মানুষের পারাপারের স্থান এই জগনাথগঞ্জ ঘাট। একটি মাত্র সেতুর অভাবে আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত পশ্চিম পাড়ের মানুষগুলো। তাদের জীবন ও জীবিকার পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন একটি মাত্র সেতু।
জানা যায়, জামালপুরের সিমান্তবর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার হাজারো মানুষ দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে, স্কুলে, কলেজে, মাদ্রাসায়, হসপিটালে, বাজারে যাতায়াতের জন্য এ খেয়াঘাট পারি দিতে হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে নৌকা পারাপার হতে গিয়ে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয়দের।
পশ্চিম তীরে একটি মাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও নেই প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পুর্বপাশে রয়েছে তারাকান্দি রেলওয়ে স্টেশন, তারাকান্দি বাস টার্মিনাল, কান্দারপাড়া বাজার, যমুনা সার কারখানা, পোগলদিঘা মহাবিদ্যালয়, পোগলদিঘা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পোগলদিঘা বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়, সরিষাবাড়ী উপজেলা হাসপাতাল, বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্র ব্যাংক বিমা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারী-বেসরকারী স্থাপনা। সব মিলিয়ে কাজিপুরের মানুষের সকল প্রয়োজনেই এপারে আসতে।
শিক্ষার্থী সেলিম রেজা, মিলন মিয়া, আলপনা আক্তার ও তাসলিমা বলেন, আমরা সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে বের হই অথচ নদীর পাড়ে এসে আমাদেরকে নৌকার জন্য বসে থাকতে হয়। সঠিক সময়ে পারাপার হতে না পেরে আমরা অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস করতে পারি না। তাছাড়া বর্ষার মৌসুমে প্রায় দিনই বৃষ্টির পানিতে ভিজতে হয় এবং ভেজা কাপড় নিয়েই ক্লাস করতে হয়। তাছাড়া ঝড়ের কবলে পড়েও অনেক সময় দূর্ঘটনার শিকার হতে হয় আমাদের’।
স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বহু সরকার এলো গেলো কিন্তু কোনো সরকারই আমাদের একটা ব্রীজ নির্মাণ করে দিলো না। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এসেও প্রতিদিনই আমাদের এই খেয়া পারাপারের জন্য দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়।
বিভিন্ন নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা এসে ভোট চেয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায় কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আমাদের দুঃখ দেখার কেউ নেই। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের জোরালো দাবি তারা যেনো অতি তাড়াতাড়ি জগনাথগঞ্জ ঘাট এলাকায় একটি ব্রীজ নির্মাণ করে আমাদের কষ্ট লাগব করেন।
এই সময় খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষেরা বলেন, অনেক কষ্ট করে আমরা ফসল আবাদ করি কিন্তু পারাপারের অভাবে সঠিক সময়ে ফসলাদী শহরের হাট-বাজারে বিক্রি করতে পারি না। কেউ অসুস্থ্য হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় না। তাছাড়াও রাতের বেলায় পড়তে হয় বড় বিপদে, অনেক সময় ঘটে যায় বড় ধরনের দূর্ঘটনা।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে প্রতিনিধি দল ব্রিজের জায়গাটি পরিদর্শন করে গেছেন। অতি দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ করা হবে বলে তিনি জানান।