প্রতিনিধি ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ , ৫:৪১:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ৪শ ১৮ বস্তা টিএসপি কমপ্লেক্স সার অবৈধ ভাবে মজুদ ও নকল সন্দেহে জব্দ করেছে প্রশাসন। বিসিআইসি’র লাইসেন্স বিহীন এক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে ১শ ৩৫ বস্তা এবং ওই দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক থেকে মালিক বিহীন ২শ ৮৩ বস্তা সার উদ্ধার করা হয়। বিপুল পরিমানে এই সার কিভাবে লাইসেন্স বিহীন ব্যবসায়ীর কাছে আসে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সার ডিলাররা। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের পশ্চিম মাথা গোল চত্বর সংলগ্ন মেসার্স লিমন ট্রেডার্স নামক বালাইনাশক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, থেতরাই বাজারের খুচরা বালাইনাশক ব্যবসায়ী রওশন আলী নওশাদের প্রতিষ্ঠান মেসার্স লিমন ট্রেডার্সে মঙ্গলবার বিকালে ট্রাক ভর্তি সার আসে। এ সময় ট্রাক থেকে ১শ ৩৫ বস্তা টিএসপি সার দোকানে নামানো হয়। ডিলার না হয়েও ট্রাক ভর্তি সার দোকানে নামানোর বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেন। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে ১৩৫ বস্তা সার জব্দ করেন। এসময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ২শ ৮৩ বস্তা সারের মালিক খুঁজে না পাওয়ায় সেগুলোও জব্দ করা হয়। পরে ওই সারগুলো উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে উপজেলা পরিষদের গুদামে রাখা হয়। টিএসপি কমপ্লেক্স সার টিএসপি বাংলা সার হিসাবে পরিচিত এবং বাজারে এই সারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
উপজেলার একাধিক বিসিআইসি’র সার ডিলারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত চার মাস থেকে টিএসপি কমপ্লেক্সের সারের বরাদ্দ নেই। এছাড়া ডিলারদের প্রতি মাসে এই সার সবোচ্চ ৩০ থেকে ৪০ বস্তা বরাদ্দ দেয়া হয়। বাজারে টিএসপি কমপ্লেক্সের চাহিদা থাকায় তা দ্বিগুন লাভের আশায় ওই সারগুলো অবৈধ ভাবে এনে মজুদ করা হচ্ছিল বলে তাদের ধারনা। বিপুল পরিমানের এই সার কিভাবে লাইসেন্স বিহীন ব্যবসায়ীর কাছে আসে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সার ডিলাররা।
মেসার্স লিমন ট্রেডার্সের সত্বাধীকারি রওশন আলী নওশাদ জানান, আমি খুচরা ভাবে সার বিক্রি করে থাকি। আমার ছোট প্রতিষ্ঠানে ১শ ৩৫ বস্তা সার থাকায় প্রশাসন তা জব্দ করে নিয়ে যান। তবে তিনি স্বীকার করেন, সার ক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য যে লাইসেন্স লাগে সেটি তার নেই এবং এটি টিএসপির বাংলা সার বলে তিনি দাবী করেন। তিনি আরও দাবী করেন, সারগুলো চট্রগ্রাম থেকে নিয়ে আসা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, মেসার্স লিমন ট্রেডার্সের মালিক বালাইনাশক খুচরা ব্যবসায়ী হয়ে তিনি টিএসপি কমপ্লেক্স সার অবৈধভাবে মজুদ করেছেন। এছাড়া সার গুলো আসল কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এ কারনে সার গুলো জব্দ করা হয়েছে। সারের নমূনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কাজী মাহমুদর রহমান জানান, অবৈধ ভাবে সার মজুদের অভিযোগে তা জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষায় যদি সার গুলো নকল হিসাবে সনাক্ত হয় তবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।