প্রতিনিধি ১১ মার্চ ২০২৫ , ৩:৩৫:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
২০২৪ সালে বায়ুদূষণে যৌথভাবে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ এবং উত্তর আফ্রিকার দেশ চাদ। জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক অঙ্গ সংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গতকাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্যজানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ডব্লিউএইচও’র বায়ুমান অনুসারে বাতাসে সর্বোচ্চ দূষণের যে মাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে এই সংস্থা, তার তুলনায় ২০২৪ সালে বছরজুড়ে বাংলাদেশ ও চাদের বাতাস ছিল ১৫ গুণেরও বেশি দূষিত। আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের পুরো বছর ডব্লিউএইচও’র মান অনুসরণ করে বাতাসকে স্বাস্থ্যকর রাখতে সক্ষম হয়েছে মাত্র ৭টি দেশ-অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, বাহামা, বার্বাডোজ, গ্রেনাডা, এস্তোনিয়া এবং আইসল্যান্ড। প্রতিবেদনে বলা হয়, চাদে বায়ুদূষণের প্রধান কারণ সাহারা মরুভূমি থেকে উড়ে আসা ধূলোবালি। আর বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, কঙ্গোসহ বেশিরভাগ দেশের বায়ুদূষণের প্রধান কারণ বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা পিএম ২ পয়েন্ট ৫-এর অতিমাত্রায় উপস্থিতি। বায়ুদূষণ কবলিত দেশের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। তবে ডব্লিউএইচও দূষণের কবলে থাকা শীর্ষ যে ২০টি শহরের তালিকা করেছে, সেই তালিকার ১২টি শহরই ভারতীয়।
ডব্লিউএইচও অবশ্য স্বীকার করেছে যে বায়ুদূষণের বাৎসরিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরির জন্য যে বিপুল তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন-সেসবের একটি অংশ পায়নি সংস্থাটি। বিশেষ করে এশিয়া এবং আফ্রিকার অনেক দেশ তাদের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত প্রদান করেনি। ফলে বৃহস্পতিবার যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে, সেটি পরিপূর্ণ বা সম্পূর্ণ নয়। তথ্য না আসার একটি কারণ হলো, অনেক উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশ তাদের বায়ুদূষণের মাত্রা পরীক্ষা করার জন্য মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেট ভবনে সংযুক্ত বায়ুমান সেন্সরের ওপর নির্ভর করে। সম্প্রতি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক নির্বাহী আদেশে দূতাবাস ও কনস্যুলেট ভবনে বায়ুমান সেন্সরের ব্যবহার বন্ধের আদেশ দিয়েছে। ফলে অনেক দেশই আসলে জানে না যে তাদের বায়ুর স্বাস্থগত মান এখন কেমন।
বিভিন্ন দেশের বায়ুমান পর্যবেক্ষণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংগঠন আইকিউ এয়ার। সংগঠনের ব্যবস্থাপক ক্রিস্টি চেস্টার শ্রোয়েডার রয়টার্সকে বলেন, অনেক দরিদ্র দেশে বায়ুমান পর্যবেক্ষণ করার মতো সেন্সর বা আনুষাঙ্গিক সরঞ্জাম নেই। আফ্রিকা মহাদেশে এমন দেশের সংখ্যা বেশি। ফলে ইচ্ছে থাকলেও তারা আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের (এপিক) ক্লিন এয়ার প্রকল্পের পরিচালক ক্রিস্টা হ্যাসেনকোফ রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেট ভবনে বায়ুমান সেন্সর বন্ধ থাকায় দূষণ সংক্রান্ত তথ্য পাঠাতে পারেনি অন্তত ৩৪টি দেশ।
সূত্র : রয়টার্স