চট্টগ্রাম

খাগড়াছড়ির ঘটনায় চট্টগ্রামের সাংবাদিকও মামলার আসামী !

  আবু তাহের ১৬ মার্চ ২০২৫ , ৪:১৬:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

খাগড়াছড়ির ঘটনায় চট্টগ্রামের সাংবাদিকও মামলার আসামী !

খাগড়াছড়িতে দায়েরকৃত চাঁদাবাজির এক গায়েবী মামলায় আসামী হয়েছেন দৈনিক আজকের পত্রিকার চট্টগ্রাম অফিসের স্টাফ রিপোর্টার আবু বকর ছিদ্দিক। মামলাটি করেছেন খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বাসিন্দা অবৈধ ব্রিফফিল্ড ব্যবসায়ী মোঃ আলমগীর হোসেন। মামলার এজাহারে বলা হয় ১০ মার্চ সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে আবু বকর ছিদ্দিকসহ অন্য আসামিরা চাঁদা দাবি করেন তার কাছ থেকে। অথচ ১০ মার্চ পুরোদিনেই আবু বকর ছিদ্দিক চট্টগ্রামে ছিলেন। ওইদিন আজকের পত্রিকা চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিসেই তিনি উপস্থিত ছিলেন। আজকের পত্রিকা অফিস ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১০ মার্চ দুপুর ১২টা ৫৩ মিনিটে তিনি অফিসে প্রবেশ করেন।

আজকের পত্রিকা অফিসের বায়োমেট্রিক এটেনডেন্ট শিটেও এর সত্যতা মিলেছে। ওইদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা’ পর্যন্ত সময়ে আবু বকরসহ আসামিরা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা এলাকায় ইটভাটায় ‘চাঁদা আদায়’ করতে গিয়েছিলেন বলা হলেও মূলত সেদিন আবু বক্কর পুরোদিনই চট্টগ্রাম শহরে তার কর্মস্থলে ছিলেন। মামলায় আজকের পত্রিকার রামগড় প্রতিনিধি বেলাল হোসাইন এবং এনটিভি অনলাইনের দীঘিনালা প্রতিনিধি আক্তার হোসেনসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার আসামী এনটিভির দিঘীনালা প্রতিনিধি আক্তার হোসেন জানান, প্রশাসন বন্ধ করে দেয়ার পরেও আলমগীর তার ভাটার কার্যক্রম অবৈধভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। কয়েকমাস আগে এ নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। কিন্তু গতকালের মামলায় আমার নূণ্যতম সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও পূর্ব শত্রুতার জেরে হয়রানির উদ্দেশ্যে আমাকে আসামী করা হয়েছে।

আজকের পত্রিকার রামগড় প্রতিনিধি বেলাল হোসাইন জানান,আমি আমার জীবনে কখনোই দীঘিনালা যাইনি। এমনকি বাদীর সাথে আমার সামান্য পরিচয়ও নেই। কাদের ইন্ধনে এই গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে সেটি বের করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।

আজকের পত্রিকার চট্টগ্রাম প্রতিনিধি আবু বকর ছিদ্দিক জানান, এটি মিথ্যা এবং হয়রানি মূলক মামলা। এসব বিষয়ে আমি কিছ্ইু জানিনা।

এ প্রসংগে আজকের পত্রিকার ব্যুরো চীফ চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ জানান, সাংবাদিক আবু বকর ছিদ্দিক চট্টগ্রামে থাকেন, চট্টগ্রামেই কাজ কাজ করেন। আমার জানামতে তিনি কোনভাবেই এই মামলাই জড়িত নয়। অবিলম্বে তাঁর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে গায়েবি মামলার বিষয়ে জানতে বাদি মো. আলমগীর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রতিবেদক। এসময় তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে শনিবার দুপুরে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে, আলমগীর মিটিংয়ে আছেন বলে অপরিচিত একজন লোক কল কেটে দেন।

জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন বলেন, মামলায় নিরীহ কাউকে অভিযুক্ত করা হবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রাথমিক তদন্ত করার সুযোগ থাকে না। তবে ঘটনায় জড়িত নয়, এমন কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে না।