বরিশাল

স্বরূপকাঠিতে নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধুর বিষপানে আত্মহত্যা, গ্রেফতার ২

  প্রতিনিধি ২২ মে ২০২১ , ৮:১০:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

প্রতীকী ছবি

পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে বিয়ের তিন মাস না পেরোতেই শশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন সইতে না পেরে অর্পিতা মজুমদার (১৮) নামের এক গৃহবধুর বিষপানে আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় শশুর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শৈলেন্দ্রনাথ রায় সহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।

অর্পিতার পিতা লিটন মজুমদার বাদী হয়ে তার মেয়ের জামাতা সবুজ রায় ওরফে শৈসব রায়, শশুর শৈলেন্দ্রনাথ রায়, শাশুরী যমুনা রায় ও প্রতিবেশী অনুপ রায়কে আসামী করে শুক্রবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় শুক্রবার রাতেই শৈলেন্দ্রনাথ রায় ও অনুপ রায়কে তাদের আতা গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার অপর আসামীরা পলাতক রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের শনিবার পিরোজপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মেয়ের বাবা ও মামলা সুত্রে জানাগেছে, ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেতলোচ গ্রামের লিটন মজুমদারের মেয়ে অর্পিতাকে স্বরূপকাঠির আতা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শৈলেন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে সবুজ রায় প্রেম করে বিয়ে করে। মেয়ের বাবা গরিব হওয়ায় বিয়েতে অমত দেয়া ছেলের পরিবার একসময় এলাকাবাসীর চাপে মেয়েকে ঘরে তুলতে বাধ্য হয়। ঘরে নেয়ার পর থেকেই অর্পিতার উপর নেমে আসে শশুর, শাশুরীর অমানুষিক নির্যাতন। একসময় বাবা মায়ের কথামত সবুজও তার স্ত্রীকে নির্যাতনে যোগ দেয় এমনকি সে নিজেদের ঘরে স্ত্রীকে রেখে প্রতিবেশি ক্ষিতীষ সাধকের বাসায় থাকতো। বুধবার সকালে অর্পিতার স্বামি, শশুর ও শাশুড়ি তাকে মারধর করলে ওই রাতে অর্পিতা বিষ পান করে।

পরে তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক এলাকাবাসী জানায়, শশুর.শাশুড়ি অর্পিতাকে প্রতিদিন নানা অজুহাতে মারধর করত। এমনকি তাকে নিয়মিত খাবার না দিয়ে এক ঘরে তালা দিয়ে আটকে রাখত। প্রতিবেশি কারো সাথেই অর্পিতাকে মিশতে দিতোনা।

ঘটনার দিন সকালে অর্পিতাকে পরিবারের সকলে মিলে মারধর করে। সেকারনেই অর্পিতা বিষপান করে। সবুজ বাংলাদেশ উন্নয়ন ভাবনা নামে একটি এনজির আড়ালে ঋনদান কার্যক্রম পরিচালনা করে বলে জানান এলাকাবাসী ।

নেছারাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) মো. সোলাইমান জানান, অর্পিতার বাবা চারজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। দুই আসামীকে গ্রেফতারের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে, পালাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।