প্রতিনিধি ২৮ জুন ২০২১ , ৮:৪৬:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ
রফিকুল হাসান ফিরোজ, রাজশাহীঃ
বাদাম খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ বিরল। কারণ বাদাম পুষ্টিকর এবং শক্তি সরবরাহকারী একটি ফল। বাদাম নদী বেস্টিত এলাকায় বেলে-দোঁয়াস মাটিতে বেশীরভাগ উৎপাদন হয়ে থাকে। এদিক থেকে এবার বাদম চাষে বিপ্লব ঘটেছে বাঘার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চলে। যা পরিদর্শনে গিয়ে মুগ্ধ হয়েছেন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জনি।
চিকিৎসকদের মতে, বাদাম বিখ্যাত এবং শক্তি সরবরাহকারী শুকনো ফল। যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রই চাষ করা হয় মধ্য প্রাচ্যে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এর নানা প্রকার জাত রয়েছে। এ দিক থেকে আমাদের দেশে চিনা বাদাম একটি জনপ্রিয় অর্থকরি ফসল হিসাবে সুপরিচিতি লাভ করেছে। এটি শুধু ভোজ্য তেল বীজই নয়, কাঁচা ও ভাজা খেতেও সাধে-গুণে এই জুড়ি নেই। চীনা বাদামে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন ও আয়রন। যা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক।
স্থানীয় লোকজন জানান, চরাঞ্চলের জমি বাদাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। প্রতি বছর এখানে বাদাম চাষ করার সুযোগ রয়েছে। ভালো ফলন হলে একর প্রতি ২২-২৪ মন বাদাম উৎপাদন করা সম্ভাব। প্রয়োজন কেবল সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, পুঁজি ও প্রশিক্ষণ। কারণ, তেলজাতীয় ফসলের মধ্যে চীনা বাদাম একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল।
গুনাগুন দিক থেকে চীনাবাদাম সরিষার তেলের পাশাপাশি রয়েছে। তাঁদের মতে, বাদাম অধিক লাভের অর্থকারি ফসল। এ দেশের আবহাওয়া ও মাটি চীনাবাদাম চাষের জন্য বেশ উপযোগী।
চরাঞ্চলের চকরাজাপুর এলাকার কৃষক গোলাম মোস্তফা, শিক্ষক মজিবর রহমান, শফিকুল ইসলাম এবং কালিদাস খালি গ্রামের হাফিজুল ইসলাম, জালাল উদ্দীন, জহুরুল মালিথা ও আকছেন শিকদার জানান, বিগত যে কোন বছরের তুলনায় এবার পদ্মার চরে বাদাম চাষ বেশি হয়েছে। এর কারন হিসাবে তারা জানান, গত বছর বাদামের মূল্য ভাল পাওয়ায় এবার তারাসহ অধিকাংশ কৃষক বাদাম চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
তাঁদের মতে, বাদাম চাষাবাদের জন্য জমিতে আগাছা পরিস্কার সহ ২-৩ টি চাষ অত:পর মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি প্রস্তুত করতে হয়। প্রস্তুত কৃত জমিতে একবার বাদামের বীজ বপন করলেই হয়। এই ফসলে অন্যান্য ফসলের মতো এতো বেশি পরিমান পরিচর্যা করার প্রয়োজন হয়না। অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে বাদাম চাষে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাঘা উপজেলা ৭ টি ইউনিয়ন এবং ২ টি পৌর সভায় যে পরিমান বাদাম চাষ হয় ,তার চেয়েও অনেক বেশি পরিমান বাদাম চাষাবাদ করা হয় একটি ইউনিয়ন চকরাজাপুরের দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চলে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, এবার ২ হাজার হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ মাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছে তার চেয়েও অনেক বেশি জমিতে।
বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, আমি সরেজমিন পদ্মার চরাঞ্চলে বাদ তোলা দেখতে গিয়েছিলাম। এ উপজেলায় এমন কোন ফসল নেই যা উৎপাদন হয়না। তবে এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকারী ফসল আম।
এরপর যতো প্রকার ফসল রয়েছে তার অধিকাংশ উৎপাদন ও লক্ষ মাত্রা হিসেব করতে গেলে পদ্মার চরাঞ্চলকে তালিকায় আনতে হবে। সেখানে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, পাট, সরিষা, আলু, পটল, বেগুন ও মুলাসহ সকল প্রকার ফসল ব্যাপক হারে উৎপাদন হয়ে থাকে। তাঁরা এসব ফসল উৎপাদনে কৃষকদের প্রনদনা সহায়তা ছাড়াও নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন বলে জানান।