প্রতিনিধি ২৭ আগস্ট ২০২০ , ৮:০২:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে আড়াই লাখ অর্থ আদায়ের অভিযোগ এনে রাউজান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেপায়েত উল্লাহসহ চারজনের বিরুদ্ধে গত ২৪ আগষ্ট চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন রাউজানের কাঞ্চন চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি। এ সসময় বাদী কাঞ্চন চৌধুরীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত। মামলার বাদী কাঞ্চন চৌধুরী চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব গহিরা গ্রামের কুন্ডেশ্বরী এলাকার হরিদাশ চৌধুরীর পুত্র। আসামিরা হলেন, রাউজান থানার সাবেক ওসি কেপায়েত উল্লাহ, রাউজান থানার সাবেক এসআই, বর্তমান ধানমন্ডি থানার এসআই সাইমুল ইসলাম, রাউজান পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মিলন চৌধুরীর ছেলে উত্তম চৌধুরী ও হরিমোহন ঘোষের ছেলে দিলিপ ঘোষ। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জনের কথা উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। মামলাটি চট্টগ্রাম সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কায়সার নিজেই তদন্ত করছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। গত ২৫ আগষ্ট মঙ্গলবার আদালতে হাজির হন মামলার বাদী কাঞ্চন চৌধুরী। সেদিন বাদীর সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করার কথা থাকলেও সাক্ষী অনুপস্থিত থাকায় জবানবন্দি রেকর্ড করতে পারেনি আদালত। পরে বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ১ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। মামলার বাদী কাঞ্চন চৌধুরী বলেন, ‘২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর রাত ১১টায় দিকে চট্টগ্রাম নগরী হতে রাউজান পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত নিজের গ্রামের বাড়িতে যাই। সেদিন রাত ১টার দিকে পুলিশ হঠাৎ আমার বাড়ি ঘেরাও করে ফেলে। ঘরেরর ভেতর থেকে পরিচয় জানতে চাইলে জানানো হয়, “আমি ওসি কেফায়েত উল্লাহ ও পুলিশ।” এ সময় পরিচয় পেয়ে আমি ঘরের বাইরে আসার পর এসআই সাইমুল আমার মাথায় পিস্তল ধরেন। আমার বাসায় অস্ত্র আছে দাবি করে ওসি কেফায়েত আমার বাড়ি তল্লাশি করতে বলেন।’’ তিনি আরো বলেন, ‘পুলিশ বাড়ি তল্লাশির নামে আমার আলমারিতে মেয়ের বিয়ের জন্য রক্ষিত জমি বিক্রির দুই লাখ টাকা, একটি চেইনসহ এক ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। সেই সাথে আমাকেও থানায় নিয়ে যায়। আমাকে নেওয়ার সময় আমার মেয়ে পুলিশের কাছে জানতে চান, বাবাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? তখন পুলিশ আমার মেয়েকে বলেন, তোমার বাবার কাছ থেকে মাফ চেয়ে নাও। তিনি আর ফিরে আসবেন না। পরদিন আমার স্ত্রী ও মেয়ে রাউজান থানায় গেলে এসআই সাইমুল তাদের কাছে রাতে আমাকে ক্রসফায়ার দেবে বলে দুই লাখ টাকা চান। তারা ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেবে বলে আর ছাড়েনি। অন্য একটি মামলায় আমাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়’। বাদী কাঞ্চন চৌধুরী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি ওসি কেফায়েত উল্লাহ, এসআই সাইমুলসহ চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।’ এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রাউজান থানার সাবেক ওসি কেফায়েত উল্লাহর মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।