প্রতিনিধি ১৫ মার্চ ২০২৫ , ১২:১৮:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ
গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকায় গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস্ লিমিটেড কারখানার নারী শ্রমিক মোছা: জান্নাতুল (৩২) মহাসড়ক পার হওয়ার সময় নিহত হয়। এ ঘটনাটি যুগান্তর, ডেইলী স্টার, ডেইলী বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, যমুনা টেলিভিশন এবং অনলাইন, মাই টিভি, প্রথম আলো, বাংলাদেশ ফার্স্ট, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে (প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক্স ও বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া ফেসবুক, ইউটিউব) ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস্ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ যার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে কারখানার সভাকক্ষে কর্তৃপক্ষ নিহতের বর্ণনা দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে দুর্ঘটনার প্রকৃত ঘটনা বিশ্লেষন করেন।
নিহত শ্রমিক মোছা: জান্নাতুল (৩২) কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বরচর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী। সে বাঘের বাজার এলাকায় ভাড়া থেকে গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস্ লিমিটেড কারখানায় সুইং অপারেটর হিসেবে চাকরি করতো। কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জয়নুল আলম রিপন সাংবাদিকদের বলেন, জান্নাতুল সুইং সেকশনের অপারেটর। ঘটনার দিন বুধবার (১২ মার্চ) কারখানায় হেঁটে আসার পথে সকাল ৬ টা ৯ মিনিটে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় উল্টা দিক থেকে আসা অটো রিকশার আঘাতে মারাত্মক আহত হয় পরবর্তীতে তাকে আহত অবস্থায় শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সকাল ৭ টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার অকাল মৃত্যুতে আমরা খুবই শোকাহত ও মর্মাহত। জান্নাতুলের সকল যাবতীয় পাওনা বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী প্রদান করা হবে।
নিহতের সহকর্মী রীনা খাতুন ও কল্পনা আক্তার জানান, নিহতের আগেরদিন জান্নাতুল ছুটি শেষে আমাদের সাথে কারখানা থেকে বের হয়েছে। ছুটির বিষয়ে সে কোনো আবেদন করেনি। বিবিন্ন পত্রিকার সংবাদে তাকে ছুটি না দিয়ে তার কাছ থেকে কারখানার পরিচয় পত্র রেখে দেওয়ার যে ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট । কারণ, আমাদের কারখানায় ফেস এবং ফিঙ্গার পান্সের মাধ্যমে উপস্থিতি (হাজিরা) নিশ্চিত করা হয়।
কারখানার পিসি কমিটির সহ-সভাপতি সিনিয়র সুইং অপারেটর সাবিনা খাতুন বলেন, আমাদের সহকর্মী মোছা: জান্নাতুল সকালে কারখানায় আসার পথে উল্টা দিক থেকে আসা অটোরিক্সার সাথে ধাক্কা লেগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাঁর মৃত্যু নিয়ে ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর পর কারখানা কর্তৃপক্ষ দাফন কাফনের সকল ব্যবস্থা করে এবং শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের প্রদানের ব্যবস্থা করবে। তিনি আরো বলেন, বহিরাগত কিছু দুষ্কৃতিকারী আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে মিশে গিয়ে সাংবাদিকদেরকে বলেছে আমাদেরকে অধিক রাত পর্যন্ত ডিউটি করানো হয়। যা সম্পুর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস লিমিটেড এ বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মেনে করমঘনটা নিশ্চিত করা হয়। যা পিসি কমিটি ও সেফটি কমিটি ও কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এর লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে কর্মঘণ্টা নিশ্চিত করা হয়। আমাদের গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস লিমিটেড একটি সুনাম ধন্য কোম্পানি যা দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে কমপ্লাায়েন্স মোতাবেক কারখানা পরিচালনা করে আসছে।
কারখানার সেইফটি কমিটির সহ-সভাপতি উবায়দুল বলেন, আমাদের কোন শ্রমিক ভাই বোনেরা সহকর্মীর মৃত্যুর বিষয়ে কোনো গণমাধ্যম কর্মীর সাথে আমরা বা আমাদের কোনো শ্রমিক ভাইয়েরা কথা বলেনি। বহিরাগত কিছু দুষ্কৃতিকারী কারখানার ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্ট করার জন্য আমাদের কারখানার শ্রমিক পরিচয়ে সাংবাদিকদের কাছে ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে।
নিহতের স্বামী ইসমাইল হোসেন বলেন, আমার স্ত্রী জান্নাতুল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। তার মৃত্যুর জন্য কেবল মাত্র অনিয়ন্ত্রিত সড়ক বাবস্থাপনা ও উল্টা পথের বাহন দায়ী। কারখানা কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। তার মৃত্যুর সহিত কারখানা কর্তৃপক্ষ এর কোন সংশ্লিষ্টতা নেয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা আমি ও আমার পরিবারকে বাথিত করেছে। বরং আমার স্ত্রীর দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে দাফন পর্যন্ত আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষ এর কাছ থেকে সকল ধরনের সহযুগিতা পেয়েছি। তাছাড়া তাকে ছুটি দেওয়া নিয়ে গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। সিসিটিভি ফুটেজে দেখেছি মহাসড়ক পার হওয়ার সময় অটোরিক্সার ধাক্কা দিলে সড়কে পড়ে গিয়ে আমার স্ত্রী মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের আগেরদিন আমার বাচ্চা অসুস্থর কথা বলে স্ত্রী ছুটির আবেদনের যে কথা লেখা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। কারণ, আমার বাচ্চা সম্পূর্ণ সুস্থ এবং তাদের মায়ের মৃত্যু পরবর্তী এই ধরনের ভুল সংবাদ প্রকাশ আমার পরিবারের সাথে উপহাস করার শামিল।
প্রতিবাদকারী: জয়নুল আলম রিপন
উপ-মহা ব্যবস্থাপক (এইচ আর এন্ড এডমিন)
গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস্ লিমিটেড।