রাজশাহী

ঝড়ে তছনছ ঘরটিই বিধবার সম্বল

  প্রতিনিধি ১৬ জানুয়ারি ২০২১ , ৪:০০:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

পার্থ দাস, বড়াইগ্রাম (নাটোর) :

 

আম্পান ঝড়ে তছনছ হয়ে যাওয়া ঘরটিই বিধবা লক্ষী রানীর একমাত্র আশ্রয়স্থল। ঝড়ে এলোমেলো হয়ে যাওয়া ঘরটির টিনের চাল নেই বললেই চলে। পাটকাঠির বেড়া সেটাও জায়গায় জায়গায় ভেঙে পাতলা হয়ে গেছে। রাতের কুয়াশায় ভিজে যায় ত্রাণে পাওয়া গায়ের কম্বলটি। সকালের রোদে তা শুকিয়েও নেন তিনি। ভাঙা ও পাতলা বেড়ার ফাঁক দিয়ে আসা শীতল হাওয়ায় ঠেকাতে মেলে দেন পড়নের ছেড়া শাড়ি। তীব্র শীতে বাবাহারা ৮ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে জড়োসড়ো জীবন কাটছে বিধবা লক্ষী রানীর। নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর আদিবাসী পাড়ার মৃত অনিল সরকারের স্ত্রী জয় লক্ষী রানী এভাবেই ছেলেকে নিয়ে কষ্টের প্রহর পার করে চলছেন প্রতিনিয়ত।
জানা যায়, গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রবল ঝাপটায় লক্ষী রানীর একমাত্র বসত ঘরটি লন্ডভন্ড হয়। পরে কোনরকমে বাঁশ লাগিয়ে ঘরটি দাঁড় করানোর চেষ্টা করলেও ধীরে ধীরে ঘরটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ঝড়ের মাস খানেক আগে দীর্ঘদিনের শ^াসকষ্টজনিত অসুস্থতায় মৃত্যু হয় তার স্বামীর। একমাত্র ছেলে অনিমেষ সরকারকে নিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ও বিভিন্ন বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে দিন চালাতে থাকে লক্ষী।
শনিবার দুপুরে লক্ষী রানী জানান, ঝড়ে ঘরটি ভেঙে পড়ার পর সরকার থেকে ঘর দিবে বলে ভূমি অফিস থেকে ঘরের ছবি তুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু এ ব্যাপারে আর কেউ খোঁজ নিতে আসেনি। তিনি আরও বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর বাসা বাড়িতে কাজ করে কোন রকম দিন চালাই। রাতে ঘুমাতে খুবই কষ্ট হয়। ঠান্ডায় ছেলে ঘুমাতে পারে না। ছেলের কষ্ট দেখলে মনে চায় না আর একদিনও বাঁচি।
স্থানীয় আদিবাসী নেতা সুনিল বাগচী জানান, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনরা ঘর পাচ্ছে। কিন্তু সেখানে এই বিধবার কোনই গতি হলো না। মাত্র ২০ হাজার টাকার ব্যবস্থা হলেই ওই বিধবা সন্তানসহ মাথা গুজার একটু ঠাঁই করতে পারতো।
স্থানীয় কাউন্সিলর মোহিত কুমার সরকার জানান, ওই বিধবা বনপাড়া পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার বাড়ি নং ২৪৫। তার জন্য সরকারী ঘর দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো। কিন্তু তিনি তার জমির কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ঘর দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে করোনাকালীন সময়ে ওই বিধবাকে নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছিলো।
পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে তার বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by