দেশজুড়ে

টানা তাপপ্রবাহ, আমে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

  প্রতিনিধি ২৯ এপ্রিল ২০২৪ , ৩:১৩:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ

টানা তাপপ্রবাহ, আমে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

চলমান টানা তীব্র তাপপ্রবাহ, প্রচণ্ড খরা ও পোকার উপদ্রবে ঝরছে সাতক্ষীরার আম চাষিদের স্বপ্ন। কীটনাশক ও পানি দিয়ে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। এমন অবস্থায় চাষিরা ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় পড়েছেন। ফলে দিনদিন দাবদাহ যতোই বাড়ছে আম চাষিদের কপালে চিন্তার ভাজ ততই স্থায়ী হচ্ছে।

জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, টানা তীব্র তাপপ্রবাহে আম টিকিয়ে রাখতে বাগান মালিকদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। তবে কী পরিমাণ আমের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটি এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেনি জেলা কৃষি বিভাগ।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভৌগোলিক কারণে সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এবং তা টানা হওয়ায় এবার কালবৈশাখীর কবলে পড়তে পারে আমবাগান। গত এক সপ্তাহ ধরে সাতক্ষীরায় গড় তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪০ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে অনাবৃষ্টি। ফলে তীব্র খরায় আম বাগানগুলোতে দেখা দিয়েছে পানিশূন্যতা। এরইমধ্যে বিভিন্ন বাগানে ঝরে পড়ছে আম।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার আম চাষি মোহাম্মদ নিদারুন গাজী ও আব্দুল গফুর বলেন, চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে ঝরছে আম চাষিদের স্বপ্ন। দাবদাহ যতোই বাড়ছে আম চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ততই স্থায়ী হচ্ছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আম চাষি মোহাম্মদ আব্দুল আলীম বলেন, তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবছর আমের ফলন বিগত কয়েক বছরের তুলনা অনেক কম। এরপর বৃষ্টি না থাকায় আমের কিছু রোগ দেখা দিচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে আম গাছের এক ধরনের সাদা পোকা। 

তিনি আরও বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে কয়েকদিন থেকে গাছের গোড়ায় পানি দিচ্ছি। কিছু কিছু আমের গুটি গাছেই শুকিয়ে গেছে। তবে বেশির ভাগ শুকিয়ে ঝরে পড়ছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের অফিসার ইনচার্জ জুলফিকার আলী রিপন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে সাতক্ষীরায় গড় তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪১ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে অনাবৃষ্টি।

তিনি আরও বলেন, তবে এপ্রিল মাসে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সাতক্ষীরায় হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, টানা তীব্র গরমে গাছে আম টিকিয়ে রাখতে বাগান মালিকদের গাছের গোড়ায় সেচ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা আম চাষিদের সঙ্গে কাজ করছেন।

তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে জেলার সাত উপজেলায় ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। চলতি বছর ৫০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।  

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট সাতক্ষীরার উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শিমুল মন্ডল বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে আমের বোটার আঠা শুকিয়ে ঝরছে আমের গুটি। গুটি ঝরা রোধে সেচের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ, প্রচণ্ড খরায় আম বাগানে সকাল ও সন্ধ্যায় পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে একমাত্র বৃষ্টি ছাড়া আমের গুটি ঝরা বন্ধের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by