বাংলাদেশ

ফিলিস্তিন-মিয়ানমারের দিকে নজর দিন, জাতিসঙ্ঘের প্রতি তথ্যমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ১৮ আগস্ট ২০২২ , ৬:৫১:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

বক্তব্য রাখছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ - ছবি : বাসস

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের উচিত ফিলিস্তিন, মিয়ানমারের দিকে নজর দেয়া এবং ভালো হতো যদি তাদের হাইকমিশনার এদেশে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসে হতাহতদের পরিবারের কথা শুনতেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনে শিশুরা ইসরাইলি সৈন্যের দিকে ঢিল ছুড়লে প্রত্যুত্তরে বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়ে তাদের হত্যা করা হয়। রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে বাংলাদেশকে বাহবা দিলেই হবে না, মিয়ানমারে গিয়ে সেখানে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়া নিশ্চিত করতে হবে। মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটেছে যেসব দেশে সেখানে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের নজর দেয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লংঘনকারী জিয়া ও তার দল। জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করেছিল, খুনিদের পুনর্বাসিত করেছিল। শুধু তাই নয়, ক্ষমতা নিষ্কন্টক করতে হাজার হাজার সেনাসদস্যকে বিনাবিচারে হত্যা করেছিল। আর ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে তার তৈরি করে রেখে যাওয়া দল বিএনপি ও তাদের দোসর জামায়াতের হরতাল-অবরোধের নামে শত শত নিরীহ মানুষকে পেট্রোল বোমায় পুড়িয়ে মারা হয়েছে।’

জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট তার বাংলাদেশ সফরকালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে যে কথা বলেছেন, সে প্রেক্ষিতে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য এই আইন। আমাদের এ আইন নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন, তাদের বলবো অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুরে এ সংক্রান্ত আইনের দিকে তাকাতে। সেখানকার আইনে আমাদের চেয়েও কঠিন ধারা আছে। আমাদের যে ধারাগুলো নিয়ে কথা হয়, ভারত ও পাকিস্তানেও একইরকম ধারা আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফ্রেমওয়ার্ক ল’ করা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। সেটির আলোকে সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাদের আইন করেছে। কই, সেগুলো নিয়ে তো কোনো কথা বলেন না।

‘অনেক সময় আইন না পড়ে, না বুঝেও নানা ধরনের কথা বলা হয়’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, এই আইনের যাতে কোনো অপপ্রয়োগ না হয়, সে জন্য আমরা সতর্ক আছি, কেউ যাতে নিগৃহীত না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’

হাছান মাহমুদ এসময় গভীর শ্রদ্ধা ও শোকের সাথে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদদের স্মরণ করে বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য কুশীলব ও যারা এর পটভূমি রচনা করেছে, বাসন্তীকে জাল পরিয়ে জনগণকে উত্তেজিত করেছে, তাদের বিচার ও মুখোশ উন্মোচনের জন্য আমি কমিশন গঠনের দাবির সাথে একাত্ম।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে কৃষিবিদ ও কৃষির সকল ক্ষেত্রে কর্মরতদের অনেক অবদান রয়েছে উল্লেখ করে একটি নিবেদন হিসেবে পরিবেশ গবেষক ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশের আয়তনের চারভাগের একভাগ নেদারল্যান্ডসের কৃষিখাতে বার্ষিক রফতানি আয় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা প্রায় আমাদের মোট রফতানির সমান। আশা করি, আমাদের কৃষিবিদরা কৃষিজমি রক্ষাসহ বহুমুখী কার্যক্রমে দেশের কৃষিখাতকে তৈরি পোশাক খাতের মতো অন্যতম প্রধান রফতানি আয়ের উৎসে পরিণত করতে সচেষ্ট থাকবেন।

বিশেষ অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, জিয়াউর রহমান কমিশন্ড অফিসার হিসেবে জীবনের বিনিময়ে হলেও রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্র ও সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে তা ভঙ্গ করে বঙ্গবন্ধু হত্যায় কুশীলবের ভূমিকা নিয়েছেন, সংবিধান লংঘন করেছেন, সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাস করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করেছেন।

বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, যারা জাতির পিতার হত্যাকারীদের রক্ষা করেছিল ও সরকারি চাকরি দিয়েছিল তারা এখনো বাংলাদেশের রাজনীতিতে রয়েছে। তারা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান চায় এবং বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। এরাই দেশে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করেছিল এবং এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

শেকৃবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে সভায় আলোচনা করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. মো: শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, শেকৃবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং যুব ও ক্রীড়া সচিব কৃষিবিদ মেজবাহ উদ্দিন ও বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ ড. মো: সাঈদুর রহমান সেলিম।

সূত্র : বাসস

আরও খবর

Sponsered content

Powered by