প্রতিনিধি ৬ মে ২০২৪ , ৭:২৬:২০ প্রিন্ট সংস্করণ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলায় কেনা গ্রামের ফাতেমা আক্তার মুন্নি হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে আসামি গ্রেফতারসহ বিচারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন। গত ২১শে এপ্রিল উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের কেনা গ্রামের অলি মিয়ার ৩য় কন্যা ফাতেমা আক্তার মুন্নি উপজেলার একই ইউনিয়নে বুধন্তী গ্রামে স্বামী তানভীরের বাড়িতে আকস্মিক বাহ্যিক দৃষ্টিতে সিলিং ফ্যানে প্রায় অর্ধ ফুট বিছানায় ঠেকানো ঝুলন্ত অবস্থায় মৃত পাওয়া যায়।
আর সেই মৃত্যুর আলামতে বিভিন্ন প্রশ্ন জেগেছে এলাকাবাসীর মনে। জানা যায়, মুন্নির বাবা অলি মিয়া একজন কৃষক ও সহজ সরল মানুষ। তার ৪কন্যা ও ২ছেলে। পরিবারের মধ্যে বড় ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৯) গত ২বছর যাবত জাপান প্রবাসী। প্রবাসে থাকা ভাই সাদ্দাম হোসেন, তার বোন মুন্নিকে অনার্স পড়া অবস্থায় জাপানে চাকুরির উদ্দেশ্যে নিয়ে যান। মুন্নি জাপান যাওয়ার প্রায় ১বছর পার হতেই একই ইউনিয়নের বুধন্তী গ্রামের আলমগীর এর ছেলে তানভীর চৌধুরীর সাথে পারিবারিক অতি- আগ্রহে ও সম্মতিতে গত বছর ২৮শে সেপ্টেম্বরে মুন্নি প্রবাস থাকাকালে টেলিফোন বন্ধনে বন্দিত হন।
মুন্নি ও তানবীরের টেলিফোনিক বিবাহের পর ১৫দিনের মাথায় মুন্নির ভাই সাদ্দাম হোসেনের সহযোগিতায় তানভীর জাপান চলে যান। চলতি বছর ১৫ই জানুয়ারি মুন্নি ও ১৬ই ফেব্রুয়ারি তানভীর দেশে এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে ২২শে ফেব্রুয়ারি স্ত্রী মুনিকে ঘরে তুলে নেন। অল্প সময়ের তানভীর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ফিরে যান নিজ কর্মস্থল জাপানে। এদিকে মুন্নির মমতাময়ী মা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে পুরো পরিবারের চক্রান্তে হত্যা হয়।
তানভীরের বোন জামাইয়ের বোনকে তানভীরের সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু সেটা না করতে পেরে, বোনজামাই জেলার সরাইল উপজেলার বাসিন্দা মো: আব্দুল গফুর (৩২) এর প্ররোচনায় ও হস্তক্ষেপে বিভিন্ন অজুহাতে আমার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যা নামে মিথ্যা প্রচার করেন। যদি আমার মেয়ে আত্মহত্যা করত ঝুলন্ত অবস্থায় পা খাটের উপর অর্ধ ফুট ঠেকানো থাকত না। এবং পাশে একটা চেয়ারও দাঁড়ানো ছিল সেটাও পজিশন মতে দাঁড়ানো থাকত না।আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের টাকার জন্য পরিবারের বিভিন্ন জন মানসিক নির্যাতন করতো। এবং বিভিন্ন সময় বলতো আমার মেয়ে জাপানের চাকরি করলে সেই বেতন তাদেরকে দিয়ে দিতে হবে।
এমন কিছু বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তাদের ঘরে লেগেই থাকত। বোন জামাই আব্দুল গফুর সরাইলের বাসিন্দা হলেও অধিকাংশ সময় শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন এবং পরিচালনা করতেন। এ নিয়ে বিষয়ে মুন্নির বাবা অলি মিয়া বাদী হয়ে পি-৭৪/২৪ নং মামলায়, তামিম চৌধুরী (১৯), মো. আব্দুল গফুর (৩২), তানভীর চৌধুরী (২৭), নার্গিস আক্তার (৪৬) ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা (২৩) ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, স্বামী তানভীর সহ উল্লিখিত অভিযুক্তরা বিভিন্নভাবে মুন্নীকে যৌতুকের তাদের চাহিদা মেটাতে মুন্নিকে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করত। এমনকি স্বামী তানভীর, মুন্নির মেসেঞ্জারে টাকা দাবি করে আসছিল। মুন্নি অপারগতা স্বীকারে এমন হত্যাকাণ্ডের অপরাধ ঘটিয়েছে।
মুন্নির পরিবারসহ এলাকাবাসীর দাবি, এমন কাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।