আন্তর্জাতিক

বাইডেনের নেতৃত্ব প্রমাণের মঞ্চে পরিণত হলো ন্যাটো সম্মেলন

  প্রতিনিধি ৯ জুলাই ২০২৪ , ৮:০৮:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

বাইডেনের নেতৃত্ব প্রমাণের মঞ্চে পরিণত হলো ন্যাটো সম্মেলন
ফাইল ছবি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওয়াশিংটনে ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রের প্রধানদের স্বাগত জানিয়েছেন। মঙ্গলবারের (৮ জুলাই) সম্মেলনটি বাইডেনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মঞ্চে পরিণত হয়েছে। দেশ ও বিদেশের মিত্রদের কাছে নিজের নেতৃত্ব প্রমাণের সুযোগ হাজির করেছে।

৮১ বছর বয়সী বাইডেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনি প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। যদিও ক্যাপিটল হিল ও দলের দাতাদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে তিনি ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে হেরে যেতে পারেন বলে। ২৭ জুনের বিতর্কে তার হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর এই উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

ট্রাম্পের সময়ে ন্যাটো মিত্রদের চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। বাইডেন সেটির বদলে পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে ঐতিহ্যবাহী মিত্রতাগুলো পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নভেম্বরে কে জিতবে তা ন্যাটো ও ইউরোপের ভবিষ্যতের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

ট্রাম্প পরামর্শ দিয়েছেন, দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি এমন ন্যাটো সদস্যদের রক্ষা করবেন না, যারা তাদের জিডিপির ২% প্রতিরক্ষা ব্যয়ের লক্ষ্য পূরণ করেনি। তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেওয়া সহায়তার পরিমাণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

বাইডেনের সহকারীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৫ টায় (স্থানীয় সময়) তার উদ্বোধনী ভাষণে তিনি প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন তুলে ধরবেন। আর তা হলো, ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী ও আরও ঐক্যবদ্ধ ন্যাটো।

হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি সোমবার সাংবাদিকদের বলেছেন, এটি কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়। এটি নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে।

কিরবি আরও বলেছেন, ন্যাটো নেতাদের সম্মেলনে উপস্থিতি বাইডেনের জোট গঠন ও আত্মবিশ্বাসের সক্ষমতা তুলে ধরছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন সোমবার বলেছেন, রিপাবলিকানরা অবশ্যই ন্যাটোর শান্তি ও সমৃদ্ধিকে উদযাপন করে এবং অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধ প্রতিরোধে আমাদের অংশীদারদের পাশে থাকবে। তবে আমরা বিশ্বাস করি ন্যাটোকে আরও বেশি কিছু করতে হবে।

এ বছর ন্যাটো ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন করছে। রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণ নতুন করে জোটটির প্রাসঙ্গিকতা পশ্চিমাদের কাছে হাজির করেছে। এই যুদ্ধ শুরুর পর ফিনল্যান্ড ও সুইডেন নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছে।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ন্যাটোর ৩২ সদস্য দেশের নেতাদের সম্মেলনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। তারা সামরিক ও আর্থিক সহায়তা এবং কিয়েভের জন্য ন্যাটো সদস্যপদ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করবেন।

তবে বাইডেনের নেতৃত্ব নিয়ে উদ্বেগের কারণে নেতারা উদ্বিগ্ন। এক কূটনীতিক বলেন, আমাদের সরকার তার টিকে থাকার ইঙ্গিত খুঁজছে।

বাইডেন প্রতিদিন নিজের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন। কিছু ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা তার নির্বাচনি প্রচারণা শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আটলান্টিক কাউন্সিলের ইউরোপ সেন্টারের জ্যেষ্ঠ পরিচালক জর্ন ফ্লেক বলেন, বাইডেনের টিকে থাকার প্রশ্ন সবার মনেই আছে।

ন্যাটো নেতারা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখোমুখি। বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানি। সম্মেলনে ন্যাটো নেতারা ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন এবং একটি সহযোগিতা উদ্যোগ অনুমোদন করবেন। যা রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনীর জন্য সমন্বিত অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করবে।

ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিতে চায়। তবে এজন্য সব সদস্য রাষ্ট্রের অনুমোদন প্রয়োজন। জোটের কয়েকটি দেশ সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর আশঙ্কায় সাবধানতা অবলম্বন করছে। নেতারা ন্যাটোতে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করবেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন ও বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

সূত্র: রয়টার্স

আরও খবর

Sponsered content