প্রতিনিধি ১৯ অক্টোবর ২০২৪ , ৪:১৯:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে করা সিনওয়ারের মরদেহের ময়নাতদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে।
নিহত হওয়ার আগে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে ইয়াহিয়া সিনওয়ার বাহুতে গুলিবিদ্ধ হন।
গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, আগের দিন বুধবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফায় নিয়মিত অভিযান চালানোর সময় হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের গোলাগুলি হয়। এ সময় নিহত হন হামাসপ্রধান সিনওয়ার।
পরে আঙুলের ছাপসহ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় যে, সিনওয়ার নিহত হয়েছেন। অবাক করা বিষয় হলো, অভিযানের সময়ও ইসরায়েলি সেনারা জানতেন না, সেখানে সিনওয়ার রয়েছেন; যদিও সিনওয়ার ইসরায়েলের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ব্যক্তি ছিলেন।
অভিযানকালে হামাসের দুই যোদ্ধা একটি ভবনে ঢুকে পড়েন। তৃতীয় একজন অন্য একটি ভবনে ঢোকেন। এর পর তাঁদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলি হয় বলে জানায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। তৃতীয় ব্যক্তিটিই ছিলেন সিনওয়ার।
ইসরায়েলের ন্যাশনাল ফরেনসিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক চেন কুগেল গুলিবিদ্ধ সিনওয়ারের মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন। গতকাল শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গোলাগুলির সময় সিনওয়ার তাঁর ডান বাহুতে আঘাত পান। সেটি সম্ভবত ছোট কোনো ক্ষেপণাস্ত্র কিংবা ট্যাংকের গোলার আঘাত ছিল।
চেন কুগেল আরও বলেন, ক্ষতস্থানের চারপাশে ইলেকট্রিক তার বেঁধে রক্তপাত বন্ধের চেষ্টা করেছিলেন সিনওয়ার। তবে এতে কাজ হয়নি। তাঁর বাহু ভেঙে গিয়েছিল।
ইতিমধ্যে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী একটি ছোট ড্রোন থেকে নেওয়া ফুটেজ প্রকাশ করেছে। এ বাহিনী বলছে, ফুটেজে ধুলামাখা যে ব্যক্তিকে চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায়, তিনিই সিনওয়ার। তাঁর হাতে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। মুখ ছিল স্কার্ফে ঢাকা।
ফুটেজে আরও দেখা যায়, বসে থাকা অবস্থায় আহত সিনওয়ার ড্রোনটির দিকে একটি লাঠি ছুড়ে মারছেন। তবে ড্রোনটিকে আটকাতে ব্যর্থ হন তিনি।
এর পরই সিনওয়ারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গুলি তাঁর মাথায় লাগে বলে জানান কুগেল। তবে গুলি কে, কখন ছুড়েছিলেন এবং কোন অস্ত্র থেকে ছোড়া হয়েছিল—সেসব স্পষ্ট করে জানা যায়নি।
পরদিন সকালে সিনওয়ারের মরদেহ ওই ভবনেই পড়ে ছিল। ভবনটি হামলায় আংশিক বিধ্বস্ত হয়। সেখানে থাকা ইসরায়েলি সেনারা বুঝতে পারেন, মৃত ওই ব্যক্তির সঙ্গে হামাসপ্রধান সিনওয়ারের উল্লেখযোগ্য মিল রয়েছে।
এর পর ইসরায়েলি সেনারা মরদেহ থেকে একটি আঙুল কেটে নেন। পরিচয় শনাক্তের জন্য পরীক্ষা করাতে চিকিৎসা কর্মকর্তাদের কাছে তা পাঠানো হয় বলে জানান কুগেল। বৃহস্পতিবার রাতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ইসরায়েলের ন্যাশনাল ফরেনসিক ইনস্টিটিউটে পৌঁছায়।