চট্টগ্রাম

মিরসরাইয়ে ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে প্রবাসীকে নির্যাতন থানায় মামলা না নেয়ার অভিযোগ

  প্রতিনিধি ৯ নভেম্বর ২০২২ , ৭:০৯:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

মিরসরাই, (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নির্মানাধিন ভবনের চাদা না দেয়ায় এক প্রবাসীকে অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে মিরসরাইয়ের ওয়ার্লেস এলাকায় এই অপহরণের ঘটনা ঘটে। অপহরণের সাথে সম্পৃক্ত একজনকে অস্ত্র সহ আটকের পর ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এতে অপহরণের ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে রহস্যের জন্ম দিয়েছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড উত্তর তালবাড়িয়া জামালের দোকান এলাকার শেখ আহম্মদ মেস্ত্রী বাড়ির প্রবাসী রাসেলের বৃদ্ধ বাবা মো: আবুল কাশেম পৈতৃক ভিটার উপর একটি পাকা বাড়ির কাজ শুরু করেন। এতে ওয়ার্ড মেম্বার মামুন নির্মান কাজে বাধা দিয়ে জানান, ইউনিয়ন পরিষদের অনুমোদন ছাড়া ঘরের কাজ করা যাবেনা। অনুমোদনের জন্য ৫ লক্ষ ৫০হাজার টাকা দিতে হবে। জোর করে ৫০ হাজার টাকা চাদা আদায়ের পর মামুন সাময়িক কাজ করার অনুমতি দেন এবং ধাপে ধাপে বাকি টাকা পরিশোদের নির্দেশ দেন। প্রবাস থেকে ফিরে এসে আবুল কাশেমের ছেলে রাসেল ধার্যকৃত চাদা ইউপি সদস্যকে পরিশোধে অপারগরা প্রকাশ করলে আবারো ঘরের কাজে বাধা আসে। বাধা ডিঙিগয়ে নির্মাণ কাজ করতে গেলে গত ৬ নভেম্বর দিনের বেলায় ইউপি সদস্য মামুন সহ তার বাহিনীর লোকজন ধারালো অস্ত্রনিয়ে প্রবাসী রাসেলের বাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ভাঙ্গচুর চালায় ও নির্মাণাধিক ভবনের ক্ষতি করে। এসময় মিরসরাই থানা পুলিশের একটি টিম উপস্থিতিত ছিল বলে জানা যায়। এই বিষয়ে ভূক্তভোগী বৃদ্ধ মো. আবুল কাশেম বাদি হয়ে রোববার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আলম মামুনসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫/২০ জনের নামে মিরসরাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। থানায় অভিযোগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ১০ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় আবুল কাশেমের ছেলে প্রবাসী রাসেলকে জামালের দোকান থেকে পিস্তল ও ধারালো অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করে ও গুরুতর জখম করে। এসময় রাসেলের চিৎকারে ঘটনাস্থলের পাশ থেকে মিরসরাই থানা পুলিশের একাদিক সদস্য এগিয়ে আসলে দুষ্কৃতিকারীরা রাসেলকে আহত আবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়। তবে ঘটনাস্থল থেকে শিপন নামে একজন কে অস্ত্র সহ গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেয় থানা পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এব্যাপারে প্রবাসী রাসেলের পিতা আবুল কাশেম জানান, ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন আমার কাছ থেকে ৫০হাজার টাকা নিয়ে গেছে। সে এখন আবার টাকার জন্য ঘরের কাজ বন্ধ করে দিছে। আমি থানায় মামলা করায় ও ছেলে বিদেশ থেকে এসে প্রতিবাদ করায় ছেলেকে একেবারে মেরে ফেলতে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ হুমকি দিচ্ছে, এখন থানায় যেতে ও ভয় পাচ্ছি।
প্রবাসী রাসেল জানান, চাহিদা মত চাদা না দিয়ে থানায় অভিযোগ করায় ক্ষুব্দ হয়ে আমাকে মেরে ফেলার জন্য অপহরণ করে মারাত্মক জখম করেছে। মিরসরাই থানা পুলিশের সদস্যরা সময় মতো আমাকে উদ্ধার না করলে মেরে রেল লাইনে ফেলে দিত। মানুষ জানতো আমি ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছি।

এ বিষয়ে মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার বিরুদ্ধে চাঁদা নেওয়ার যে অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তার সাথে কাদের ধন্ধ আছে আমি জানি না। তারাই হয়তো তাকে মারধর করেছে। সোমবার সন্ধায় আমি ও থানার ৩ এসআই আতিউর, রাজিব ও সিরাজ ওয়ারলেস এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন রাসেলের বাচাও বাচাও চিৎকার শুনে আমরা তাকে উদ্ধার করি। তাকে যারা মারছে তারা তখন পালিয়ে গেছে। আমি অপহরণ বা চাদাবাজির সাথে সম্পৃক্ত নই। রাজনৈতিক কারনে রাসেলের উপর হামলা হতে পারে । মিরসরাই সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম দিদার বলেন, আমার পরিষদের সদস্য মামুন ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। কেউ আমাকে জানায়নি।
মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কবির হোসেন বলেন, অপহরণের ঘটনায় থানা পুলিশ মামলা নিচ্ছেনা কথাটা ঠিক নয়। বিকটিমের পরিবার মামলা করার জন্য থানায় আসবে আসবে বলে এখনো থানায় আসেনি। তাদেরকে থানায় আসতে বলেন অভিযোগ দিলে অবশ্যই মামলা নিথিভুক্ত করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by