দেশজুড়ে

রাজশাহীতে এবার দেরিতে বসলো আমের হাট

  প্রতিনিধি ৩১ মে ২০২০ , ৮:০৬:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজশাহী প্রতিনিধি:  রাজশাহীতে গত বছরের চেয়ে এবার অন্তত ১৫ দিন দেরিতে আমের হাট বসেছে। জেলার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে গতকাল রবিবার থেকে বসছে এই হাট। এটিই এ অ লের সবচেয়ে বড় আমের হাট। এবার আম পরিপক্ক হতে সময় বেশি লাগার কারণে হাটটি বসতে দেরি হলো।
রবিবার সকালে হাটে গিয়ে দেখা গেছে, ভ্যানের ওপর ঝুড়ি আর ক্যারেটে সাজিয়ে রাখা হয়েছে গুটি, রাণীপছন্দ আর গোপালভোগ জাতের আম। তবে পুরো হাট এখনও ভরেনি। স্বল্প সংখ্যক ব্যবসায়ী হাটে আম তুলেছেন। হাটে যেমন বিক্রেতার সংখ্যা কম তেমনি কম ক্রেতার সংখ্যাও। তাই তুলনামুলক কম আমের দামও।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গুটি জাতের আম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আর গোপালভোগ বিক্রি করা হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ টাকা মণ দরে। তবে আকারে একটু বড় গোপালভোগের দাম ব্যবসায়ীরা ২ হাজার টাকা পর্যন্ত চাচ্ছেন। ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সেসব আম। তবে হাটে হিমসাগর বা খিরসাপাত দেখা যায়নি।
পুঠিয়ার শিবপুর এলাকার আম ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান জানালেন, চার-পাঁচ দিন আগে থেকে হাতেগোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী তাদের লিজ নেয়া বাগান থেকে আম ভেঙে হাটে তুলছেন। রবিবারই সবচেয়ে বেশি আম উঠেছে হাটে। এখন প্রতিদিন আরও বেশি পরিমাণ আম উঠবে বলে মনে করছেন তিনি।
আরেক আম ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, এবার আম পরিপক্ক হতে একটু সময় লাগলো বেশি। তারপরেও করোনাভাইরাসের জন্য আম নামানোর সাহস পাচ্ছিলেন না তিনি। তারপরেও রবিবার অল্প পরিমাণ আম এনেছেন তিনি। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা কম। তাই আমের দামও কম।
আমের ক্রেতা জুলফিকার রহমান বললেন, প্রতিবছরই আম কিনে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো লাগে। সে জন্য এবারও হাটে এসেছেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ভিড় এড়িয়ে চলা খুব জরুরি। কিছু দিন পর হাটে প্রচÐ ভিড় দেখা দিতে পারে। তাই তিনি আগেভাগেই আম কিনতে এসেছেন। আমের দাম নিয়ে অভিযোগ নেই বলেও জানান তিনি।
রাজশাহী জেলায় আম বাগান রয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। অপরিপক্ক আম নামানো ঠেকাতে গেল চার বছরের মতো এবারও আম নামানোর সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
গত ২২ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে রাজশাহীতে ঝড়-বৃষ্টিতে প্রচুর আম ঝরে যায়। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, সেদিন গাছের ১৫ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। এতে চাষিদের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আম্ফান যেতে না যেতেই ২৬ মে দিবাগত রাতে কালবৈশাখীতে ঝরে আরও অনেক আম। এরপর চাষিরা আম নামানোর দিকে মনোযোগী হয়েছেন। অল্প অল্প করে হাটে উঠতে শুরু করেছে আম। রাজশাহী মহানগরীতেও খুব স্বল্প পরিমাণ আম বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীদের।
করোনাকালে বাজারজাত নিয়ে যেন সমস্যা না হয় সে জন্য এবারই প্রথম শুধু আমের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রেন চলবে। ট্রেনে দেড় টাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এবং এক টাকা ৩০ পয়সা কেজি ভাড়ায় আম ঢাকায় নেয়া যাবে। ঢাকায় গিয়ে ব্যবসায়ীদের সুবিধামতো স্টেশনে আম নামানো হবে। কুরিয়ার সার্ভিসগুলোও আম পাঠাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by