বাংলাদেশ

রিজভীর কথা পরিশীলিতভাবে পরিবেশন করেছে টিআইবি

  প্রতিনিধি ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ , ৩:৩২:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

রিজভীর কথা পরিশীলিতভাবে পরিবেশন করেছে টিআইবি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বক্তব্যের সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির ভাষা আর টিআইবির ভাষা মিলে গেছে। রিজভী (বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব) প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করে যে কথাগুলো বলে সেগুলোকে একটু পরিশীলিতভাবে টিআইবি পরিবেশন করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে টিআইবির বক্তব্য এবং সমসাময়িক ইস্যুতে করা সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, টিআইবির একটি রিপোর্ট গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। টিআইবি সবসময় গবেষণালব্ধ রিপোর্ট বলে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে টিআইবি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনো গবেষণা না করে কিছু শ্যালো বিষয়, কিছু পত্রিকার রিপোর্ট এবং তড়িঘড়ি করে কিছু তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে প্রেস ব্রিফিং করে। গতকালেরটাও আমার কাছে সেরকম মনে হয়েছে।

নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে প্রকৃত পক্ষে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের প্রশংসা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা পর্যবেক্ষক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আসা পর্যবেক্ষক, ওআইসিভুক্ত-সার্কভুক্ত-কমনওয়েলথভুক্ত দেশ থেকে যারা এসেছিল সবাই।

তিনি বলেন, নির্বাচনের পর সবাই প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। বিভিন্ন দেশ নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। পৃথিবীর শক্তিধর দেশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশ নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার এবং সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।

বিএনপির ভাষা ও টিআইবির ভাষা মিলে গেছে বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, টিআইবি রিপোর্ট আসলে কারও পক্ষের হয়ে দেওয়া, সেই প্রশ্ন রেখেছে অনেকে। কারণ বিএনপির ভাষা আর টিআইবির ভাষা মিলে গেছে। রিজভী আহমেদ প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করে যে কথাগুলো বলে সেগুলোকে একটু পরিশীলিতভাবে টিআইবি পরিবেশন করেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

তিনি বলেন, সেজন্য বিএনপিসহ যারা নির্বাচন বর্জন করেছে, প্রতিহত করতে চেয়েছে, প্রতিহত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এখনও প্রয়াস চালাচ্ছে তাদের মুখে অস্ত্র তুলে দেওয়ার জন্য এ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে বলে অনেকে বলছে। যেভাবে নির্বাচন কমিশন কঠোরভাবে ও সুন্দরভাবে নির্বাচন পরিচালনা করেছে সেটির বিন্দুমাত্র প্রশংসা টিআইবির রিপোর্টে নেই।

টিআইবির সমালোচনা করলেও প্রতিষ্ঠানটির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ নির্বাচন হয়েছে সেটিকে ম্লান করতে টিআইবি রিপোর্টটা দিয়েছে। টিআইবির মতো প্রতিষ্ঠান দরকার আছে। সিভিল সোসাইটির প্রতিষ্ঠানগুলো যারা সরকারের ভুলত্রুটি উপস্থাপন করে, সরকারের সমালোচনা করে আমরা সেগুলোকে সমাদৃত করার সংস্কৃতিটাই লালন করি। কিন্তু যখন রিপোর্ট যায় কারও পক্ষ হয়ে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তখন সেটি রাষ্ট্র, সমাজ ও সরকার কারো উপকারে আসে না; সেটি বিশেষ কোন গোষ্ঠীর মুখপাত্র হয়ে দাঁড়ায়।

টিআইবি যেন বিশেষ কোনো গোষ্ঠী কিংবা নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির কিংবা গণতন্ত্রবিরোধী কোনো শক্তির মুখপাত্র না হয় তেমনটা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

টিআইবিকে সরকারের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিশ করা হবে কিনা-জানতে চায় সাংবাদিকরা। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করব, টিআইবি নিজেরা নিজেদের সংগঠনের যে মর্যাদা, সংগঠন সম্পর্কে যে ধারণা মানুষ আগে পোষণ করত সেখান থেকে সরে এসে কারও মুখপাত্র যেন না হয়। নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির কিংবা গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ না করে সেটি আমাদের কামনা।

তিনি বলেন, বিজ্ঞজনরা বলছেন, টিআইবি যারা নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির বা গণতন্ত্রবিরোধী যারা অপশক্তি তাদের মুখে অস্ত্র তুলে দিতে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কিনা সেই প্রশ্ন তুলেছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by