চট্টগ্রাম

লক্ষ্মীপুরে মেঘনায় পানির বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে ভাঙনের তীব্রতা

  প্রতিনিধি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৬:৪৬:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষীপুর মেঘনায় পানি বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে ভয়াবহ ভাঙন। গত এক মাসে নতুন করে ভাঙনের শিকার শতাধিক পরিবার। ভাঙন ঠেকাতে সরকারের দেয়া তিন হাজার এক শত কোটি টাকা বরাদ্ধে বাঁধ নির্মান কাজ শুরু হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে চোখের সামনে একের পর এক বসতবাড়ি, বিস্তীর্ণ জনপথ বিলীন হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, বর্ষার শুরু থেকে মেঘনার ভাঙনে দিশাহারা সদর, রায়পুর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার নদী তীরের মানুষ। প্রতিদিন নতুন করে ভাঙছে একের পর এক বসতভিটা। অনেকেই আতঙ্কে সরিয়ে নিচ্ছেন ঘরবাড়ি। তিন যুগ ধরে টেকসই বাঁধ না থাকায় ৪৪ কিলোমিটার এলাকায় প্রতিনিয়ত ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন সময়ে ভাঙন ঠেকাতে প্রকল্প নিলেও তা কোনো কাজে আসেনি বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, জিও ব্যাগ ডাম্পিং তিন মাস বন্ধ থাকার পর তীর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হলেও তা থেমে থেমে চলছে কাজ। এতে করে প্রতিনিয়ত ভয়াবহ ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে।

রামগতি ও কমলনগর উপজেলা থেকে কমলনগর প্রেসক্লাব এর সভাপতি আব্দুল মজিদ ও পল্লি চিকিৎসক হেলাল উদ্দিন জানান, কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন, চৌধুরী বাজার, নাছিরগঞ্জ বাজার, চরজগবন্ধু, চরফলকন, লুধুয়া, চরকালকিনি এবং রামগতি উপজেলার চর আলেক জেন্ডার, রামগতি বাজার, চর আবদুল্লা, বালুরচর সহ বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।

রায়পুর উপজেলা থেকে আফসার কবিরাজ জানান, রায়পুর উপজেলার উত্তর চর আবাবিল, উত্তর চরবংশী ও দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী মেঘনা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদী তীরবর্তী স্থাপনা ও ফসলী জমি। গত ১০ বছরে সহস্রাধিক ঘরবাড়িসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অগণিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদসহ নানারকম সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থাপনা।ভাঙন প্রতিরোধে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন থেকে তীর রা বাঁধ নির্মাণের দাবী জানালেও প্রতিশ্রতি পর্যনন্তই সীমাবদ্ধ রয়েছে তা।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জুন মাসে ৩১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য তিন হাজার উনানব্বই কোটি ছিয়ানব্বই লাখ নিরানব্বই হাজার টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দেয় সরকার। এরপর ৯৯ প্যাকেজে ভাগ করে একই বছরের আগস্ট মাসে প্রকল্পের টেন্ডার আহবান করা হয়েছে।

প্রথম পর্যায়ে ২৪ প্যাকেজে ১৫ জন ঠিকাদার টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পায়। সে অনুযায়ী এ বছরের ৯ই জানুয়ারি কমলনগরের সাহেবের হাট এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং এর মাধ্যমে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে উক্ত কাজের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরবর্তী এখন পর্যন্ত যতটুকু কাজ হওয়ার কথা ছিল, তার একভাগও সম্পন্ন হয়নি। এছাড়া বালু সংকট দেখিয়ে তিন মাস কাজ বন্ধ করে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। বালু সংকট দূর করে জুনের শুরুতে আবারো শুরু হয় বাঁধ নির্মাণ কাজ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও নদির স্রোত বেশি থাকার কারনে আপাতত কাজ বন্ধ আছে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ৩০ সেপ্টেম্বরে পর কাজ শুরু করবেন বলে জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by