সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে মানসিক হাসপাতালে পাঠালো চার ছেলে

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

লক্ষ্মীপুরে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় মোহাম্মদ উল্যাহ (৬০) নামের এক বৃদ্ধ বাবাকে হাত-পা শেকলে বেঁধে মারধর করে পাগল সাজিয়ে মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে চার ছেলে ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনাটি অমানবিক উল্লেখ করে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী থানায় অভিযোগ দিতে গেলেও পুলিশ লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পুলিশ বলছে, তদন্ত করে আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বৃদ্ধ মোহাম্মদ উল্যাহ উপজেলার চরবংশী ইউনিয়নের ষ্টীল ব্রিজ এলাকার (আবু তাহের মেম্বার বাড়ি) মৃত- অজি উল্যার ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, ষাট বছর বয়সী মোহাম্মদ উল্যাহ দীর্ঘ ২২ বছর তিনি প্রবাসে ছিলেন। সেখানে তিনি যা উপার্জন করতেন তার অর্থ পরিবারের কাছে পাঠাতেন। কিন্তু প্রবাস থেকে চার বছর আগে দেশে ফেরেন তিনি। আসার পর তার স্ত্রী, চার ছেলে মাসুদ, আলমগীর, উজ্জ্বল ও জাহাঙ্গীরের কাছে পাঠানো অর্থের হিসাব চান। তখন থেকেই তার ওপর চলে অমানবিক নির্যাতন। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ভোর রাতে মোহাম্মদ উল্যাহর হাত-পা শিকলে বেঁধে অজ্ঞাত কোন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তার চিৎকারে আশেপাশের আনোয়ার হোসেন সবুজ ও ইব্রাহীম এগিয়ে আসলে তাদেরও মারধর করা হয়।

ভুক্তভোগীর মা আলিমা খাতুন, বোন ফাতেমা খাতুন ও মেয়ে রাবেয়াসহ এলাকাবাসীর দাবি,  মোহাম্মদ উল্যাহ একজন সুস্থ ও ভালো মানুষ। তার চার ছেলের নামে সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় তাকে নির্যাতনের পর হাত-পা বেঁধে পাগল সাজিয়ে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানিয়ে মোহাম্মদ উল্যাহকে ফেরত চান তারা।

অভিযুক্ত ছেলে জাহাঙ্গীর দাবি করেন, মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় তার বাবাকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। তবে কোথায় ভর্তি করা হয়েছে জানাতে পারেননি তিনি। এসময় ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন- তার বাবা মোহাম্মদ উল্যাহ তাদের উপর অত্যাচার করতেন। তাই চিকিৎসার জন্য একটি সংস্থার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, ঘটাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ছেলেদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং বৃদ্ধকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।

এদিকে জন্মদাতা পিতার উপর এ ধরনের অমানবিক নির্যাতন ও রাতের আধারে পাগলা গারদে প্রেরণের প্রতিবাদে ও জড়িতদের দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন এলাকাবাসী। চরবংশী ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মোহাম্মদ উল্যাহ বড় ভাই, মা, বোন, এক মেয়েসহ অর্ধশতাধিক এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।