প্রতিনিধি ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ৩:৫৪:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা ঘনিয়ে আসায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শেরপুরের সীমান্ত ঘেষা নালিতাবাড়ীর মৃৎশিল্পীরা।
০৩ ফেব্রুয়ারি পঞ্জিকা অনুযায়ী সরস্বতী পূজা। তাই মৃৎশিল্পীরা এখন মাটি,খড়,সুতলি আর বাঁশ দিয়ে সরস্বতী পুজার প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত। ইতিমধ্যে প্রতিমার কাঠামো ও মাটির কাজ শেষ। রঙ আর তুলি আঁচড়ের কারুকার্য প্রতিমার রূপ ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত কারিগররা। শেষে চলবে প্রতিমা বেচা- বিক্রি। এই বেচা-বিক্রি চলবে,পূজা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত।
সরজমিনে উপজেলার লোকনাথ মন্দির ও কালী মন্দির প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। এখানে তৈরী হচ্ছে ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের প্রতিমা। পছন্দের প্রতিমার অর্ডার দিতেও বেড়েছে ক্রেতাদের আনাগোনা।
প্রতিমা তৈরীর সরঞ্জামাদির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রি করে লাভ কম হলেও থেমে নেই মৃৎশিল্পীদের আদি পেশাদারি এ কাজ। সনাতন ধর্ম মতে বিদ্যার দেবী সরস্বতী। হিন্দু শিক্ষার্থীরা আশীর্বাদ লাভের আশায় প্রতিবছর পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী দেবীর পূজা করে থাকেন। এ হিন্দুধর্মবালম্বীদের বাড়িতে বাড়িতে নির্মাণ করেন অস্থায়ী মন্দির। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূজা উদযাপনে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে।
প্রতিমা তৈরীর মৃৎশিল্পী নিবারণ পালে’র সাথে কথা বলে জানা গেছে, আকারভেদে প্রতিটি প্রতিমা বিভিন্ন মুল্যে বিক্রি করা হয়। লাভ কম হলেও মুজুরির টাকা উঠায় মৃৎশিল্পীরা তাদের বাপ-দাদার আদি পেশা ও ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছেন। তবে এবারের প্রতিমা তৈরিতে লাভ আগের দিনগুলো তুলনায় অনেক কম। দেশের পরিস্থিতি ভালো না থাকায় পুজার পরিমাণ কমেছে এই উপজেলায়। এবং নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় আমরা প্রতিমা তৈরি করে তা বিক্রিতে তেমন লাভের মুখ দেখছি না।
সরস্বতী প্রতিমা অর্ডার দিতে আসা প্রমোদ সাহা,জয় সাহা জানালেন, প্রতি বছরে মতো এবারও বাড়িতে ও মহল্লায় সরস্বতী পূজা উদযাপন করবে তারা। তাই পছন্দের প্রতিমা ক্রয়ের জন্য অর্ডার দিতে এসেছে। বিদ্যার দেবীর পূজা-অর্চনা করতে স্কুল ও বাসায় তাদের আয়োজনের কমতি নেই বলেও জানালেন।
প্রতিম তৈরীর আরেক কারিগর মৃৎশিল্পী সুশান্ত পাল বলেন, ‘প্রায় ছোট বয়স থেকেই এই কাজ করছি। প্রতিমা তৈরির কাঁচামাল বা জিনিসপত্রের দাম বেশী হওয়ায় অনেকে এই পেশা ছেড়ে দিয়েছে। লাভ কম তবুও বাপ-দাদার পেশা ও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে এখনো বিভিন্ন পূজায় প্রতিমা তৈরীর কাজ করছি। এক পেশায় এখন সংসার চলার কোনোমতো উপার্জন হয়।