প্রতিনিধি ১০ এপ্রিল ২০২১ , ৮:১৯:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ
সিলেটে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার। সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী ভিত্তিতে ২০০ বেডের আলাদা আরেকটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার প্রস্তুত করা হচ্ছে। সিলেট বিভাগে গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আরও ১জনের মৃত্যু ও আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১৯৯ জন।
যুক্তরাজ্য ও আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাসের নতুন ধরণের সংক্রমণ সিলেট বিভাগে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে হাসপাতালগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় চার থেকে পাঁচগুণ বেশি রোগী হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছেন।
বেশিরভাগ রোগীরই প্রয়োজন হচ্ছে আইসিইউ সেবা, যা সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারি হাসপাতালগুলোকে। এবার ৪২ থেকে ৫২ শতাংশ করোনা রোগীর ক্ষেত্রেই প্রয়োজন পড়ছে অক্সিজেন সাপোর্ট। এদিকে, বিভাগের চার জেলায় আইসিইউ রয়েছে মাত্র ১৯টি। তারমধ্যে সিলেট জেলার আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ১৪ টি। বাকি ৫টি মৌলভীবাজার জেলায়।
সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে কোনো আইসিইউ বেড নেই। সিলেটের করোনা আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসিইতে বেড়েই চলছে রোগীর চাপ। ইতিমধ্যে ১০০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে ৭৮জন করোনা পজেটিভ রোগী ভর্তি রয়েছেন। ১৩ জন রোগী রয়েছেন আইসিইউতে।
বর্তমানে পজেটিভ ছাড়া কোনো রোগী ভর্তি করা হচ্ছে না এ হাসপাতালে। তাই উপসর্গ নিয়ে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে আসা অনেক রোগী ফিরেয়ে দেওযা হচ্ছে। তবে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী ভিত্তিতে ২০০ বেডের আলাদা আরেকটি করোনা আইসোলেশন ওর্য়াড প্রস্তুত করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনে। আইসোলেশন সেন্টারে রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাগুলো নিশ্চিত করেই শুরু হবে ওয়ার্ডের কার্যক্রম।
ওসমানী হাসপাতালে শুরু থেকেই করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রেখেই তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হবে।
এ হাসপাতালে আলাদা করোনা ওর্য়াড চালুর পরই তাদেরকে সেখানে স্থানান্তর করা হবে। বিভাগের চার জেলায় গত দুই-তিন মাস করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও মার্চের শুরু থেকে ফের বাড়তে শুরু করেছে।
সিলেটের করোনা আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল ও সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-সহ বেসরকারি করোনা হাসপাতাল গুলোতে বেড়েছে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা।
গত শনিবার পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত চব্বিশ ঘণ্টায় আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে বিভাগে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৯৯ জনে।
একই সময়ে সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে আরও ১৯৫ জনের শরীরে। সিলেট বিভাগে মোট করোনা প্রমাণিত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮ হাজার ৫৩৩ জনে।
বিভাগে করোনা থেকে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৬৯৯ জন।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরা এখন থেকে আলাদাভাবে করোনা আক্রান্ত বা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে নতুন ভবনে আলাদা একটি ওয়ার্ড চালু করতে চাচ্ছি।