প্রতিনিধি ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৬:৪১:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম অফিসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি সোনা চুরির ঘটনায় করা মামলায় দুই রাজস্ব কর্মকর্তাসহ তিন জনের আবারও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার এ রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডে দেওয়া অভিযুক্তরা হলেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, শাহিদুল ইসলাম সাহেদ ও সিপাহী আফজাল হোসেন।
আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) উত্তরা জোনাল টিমের পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম আসামিদের প্রত্যেকের ফের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। একইসঙ্গে আসামি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আর আকরাম শেখ ও মাসুম রানা এবং সিপাহী মোজাম্মেল হক, নিয়ামত হাওলাদার ও রেজাউল করিমকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত ৩ আসামির ৩ দিন করে রিমান্ড এবং অপর ৫ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অভিযুক্ত ৮ আসামিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ফের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আকরাম শেখ ও মাসুম রানা গোডাউনের বিভিন্ন অনিয়ম সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আসামিদের কোনো ঝামেলা ছাড়া দায়িত্ব বুঝে নিতে বলে। যদি না নেয় তাহলে চাকরি চলে যাওয়া ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। যা যাচাই বাছাই চলছে।
আসামিদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম ও নিয়ামত জিজ্ঞাসাবাদে জানান, বিমানবন্দরের ট্রানজিট ও মূল্যবান গুদামের দায়িত্ব গত জানুয়ারি মাসে তারা গ্রহণ করেন। এসময় একজন যাত্রীকে মালামাল বুঝিয়ে দেওয়ার সময় আলমারিতে তারা ওই যাত্রীর মালামাল খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তখন আগের দায়িত্বরত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, এ তিন আসামি ও তার অধীনস্থ সিপাহী মিলে ওই যাত্রীর মালামাল গুদামে খোঁজ করতে থাকেন। ঐদিন মালামাল না পাওয়ায় পরের দিনও যথারীতি খোঁজাখুঁজি অব্যাহত থাকে। পরে মালামাল না পাওয়া গেলে শহিদুল ও সাইদুল আগে এআরও’র পরামর্শে আসামিরা বাজেয়াপ্ত স্বর্ণ থেকে নিয়ে ওই যাত্রীকে তার মাল বুঝিয়ে দেয়। ফলে বাজেয়াপ্ত স্বর্ণ থেকে ওই পরিমাণ মালামাল কমে যায়।
তারা আরও জানায়, গত জুন মাসে বাজেট ঘোষণার দিন থেকে অর্থাৎ ২ জুন ২৭০ পিস গোল্ডবার আটক করে গুদামে রাখা হয়। পরে গুদাম রেজিস্ট্রারে উঠানোর সময় ওই গোল্ডবারগুলো আপাত দৃষ্টিতে কম মনে হলে গণনা করা হয়। গণনা করে ২৭০ পিস গোল্ডবারের মধ্যে ৯০ পিস কম পাওয়া যায়। যা কোনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি এবং এ বিষয়ে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।
উল্লেখ্য, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঢাকা কাস্ট হাউসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি ৫০১ গ্রাম সোনা খোয়া গেছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৫০ কোটি টাকার বেশি। সাধারণত বিমানবন্দরে যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ করা সোনার বার, অলংকারসহ মূল্যবান জিনিস এই গুদামে রাখা হয়। গুদামে রক্ষিত সোনার হিসাব মেলাতে গিয়েই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।