দেশজুড়ে

অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ডুবেছে লক্ষ্মীপুরের বিস্তৃীর্ণ জনপদ

  প্রতিনিধি ২৫ জুলাই ২০২৪ , ২:৪২:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ডুবেছে লক্ষ্মীপুরের বিস্তৃীর্ণ জনপদ

মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ডুবেছে লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় এলাকা। স্থানীয়রা বলছেন, পূর্ণিমার প্রভাবই এই অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণ।

বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলের দিকে উপকূলে ঢুকতে শুরু করে মেঘনার এই অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি । এতে জেলার রামগতি এবং কমলনগর উপজেলার মেঘনা নদী সংলগ্ন বিস্তৃীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। জোয়ারের পানিতে রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, ফসলি জমি, নিচু ঘরের ভিটি তলিয়ে যায়। রাত ৮ টার পর পানি নামতে শুরু করে। 

বুধবার ছাড়াও এর আগে সোমবার (২২ জুলাই) ও মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) একইভাবে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, টানা তিনদিন উপকূল প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগ এবং ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন তারা। ক্ষেতের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। হাঁস-মুরগি এবং গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। গৃহস্থালির রান্নার কাজেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

তাদের অভিযোগ, মেঘনা নদীর নির্মাণাধীন তীররক্ষা বাঁধটি সময়মতো নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বছর জোয়ারের পানিতে ডুবতে হচ্ছে। দ্রুত বাঁধ নির্মাণ হলে জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেতেন উপকূলের বাসিন্দারা।

কমলনগরের চরমার্টিন এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ জালাল আহমেদ বলেন, জোয়ারের পানিতে তাদের বসতবাড়ি তলিয়ে গেছে। যাদের ঘরের ভিটি নিচু তাদের ঘরে পানি ঢুকেছে। এলাকার রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে।

তিনি জানান, এলাকার অনেকেই ক্ষেতে আমনের বীজতলা তৈরি করেছে। জোয়ারের পানিতে ডুবে সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

চরমার্টিন এলাকার আবদুজ জাহের বলেন, রাস্তা-ঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার ফলে চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। পুকুর ডুবে মাছ ভেসে গেছে।

উপকূলের আরেক বাসিন্দা আবু তাহের বলেন, দিনে এবং রাতে মিলিয়ে প্রতিদিন দুই বার জোয়ার উঠে। রাতের বেলা জোয়ারে হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। খাঁচার ভেতরে থাকা অনেক মুরগি পানিতে ডুবে মারা যায়।

চরমার্টিন কালভার্ট এলাকার গৃহবধূ মরিয়ম বলেন, জোয়ারের সময় খাটের উপর বসে থাকি। চুলায় পানি ঢুকে পড়েছে। রান্নার কাজ করা যায় না। শিশু সন্তানসহ পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বিপাকে পড়ছি।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, জোয়ারের তোড়ে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রতি বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ বছর অসময়ে (আগাম) জোয়ারের পানিতে উপকূল প্লাবিত হয়েছে।

মো. ইউসুফ নামে একজন বলেন, নদীর তীররক্ষা বাঁধের কাজ চলছে। কিন্তু কাজ এখনো শেষ হয়নি। ফলে জোয়ারের পানি বাড়লে উপকূল তলিয়ে যায়। এতে আমাদের ফসলসহ বসতবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। তাই দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার দাবি জানাই।

আরও খবর

Sponsered content