প্রতিনিধি ১৫ এপ্রিল ২০২০ , ৭:২৬:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের আতংকের কারনে সারাদেশ আজ লকডাউনে রয়েছে। ঘড় হতে বের হতে পারছে না খেটে খাওয়া সাধারন মানুষগুলো। নিত্যরুজি করে যারা জীবিকা নির্বাহ করতো তারা আজ অসহায়ত্ব জীবন কাটাচ্ছে। এজন্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ প্রক্রিয়া চালূ রয়েছে। যারা লোকলজ্জার ভয় কাটিয়ে ত্রাণের লাইনে গিয়ে দাঁড়াতে পারে তাদের ভাগ্যে এ সকল ত্রাণ পৌঁছালেও অনেকেই রয়ে যায় পর্দার আড়ালে। পেটে ভাত নেই তবুও সামাজিকতার ভয়ে ধরতে পারেনা ত্রাণের থলে।নিভৃতে কেঁদে চলে দিনের পর দিন রাতের পর রাত। এমন হাজার হাজার মধ্যবিত্ত নারী-পুরুষের মধ্যে একজন নারী হলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের রহমতপুরে বসবাসকারী রোজিনা বেগম। স্বামী সাইদুল ইসলাম বরিশাল শহরের সামান্য একজন খেটে খাওয়া শ্রমজীবি মানুষ। করোনায় লকডাউনের কারনে রুজি-রোজগার বন্ধ হয়ে বরিশালে আটকে রয়েছে। রোজিনা বেগম কলাপাড়া শহরের বিভিন্ন বাসায় বাচ্চাদের কোরআন শিক্ষা দিয়ে যে হাদিয়া পেত তাই দিয়ে কোনমতে দিনপাত করতেন। সর্বনাশা করোনার লকডাউনে আজ সে পথও তার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হাতে যা ছিল তাই দিয়ে কিছুদিন কাটলেও এখন অভাব যেনো তার ঘাড়ের উপর উঠে বসেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের রহমতপুর এলাকার কদম মৃধা বাড়ির পাশে লায়লা মঞ্জিলের একটি ছোট্ট ঘরে মাসিক দুই হাজার টাকা ভাড়ায় থাকেন রোজিনা বেগম। জানা যায়, অভাবের কারনে গত দুইমাস যাবৎ ঘড় ভাড়াও পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। যদিও বাড়িওয়ালা এখন পর্যন্ত ভাড়া টাকার জন্য কিছু বলেনি তবুও চিন্তা তো মাথায় থেকেই যায়। তদুপরি, এখন ঘরে খাবার না থাকায় পাশবর্তী ভাড়াটিয়ারা সহযোগীতা করে চালাচ্ছে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে।
অসহায় রোজিনা জানান, আমি বাড়ি বাড়ি কোরআন শিক্ষা দিয়ে হাদিয়া হিসাবে যা পেতাম তাই দিয়ে কোনমতে দিন কাটাতাম। করোনার কারনে আমার সে পথও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন আমি খুবই অসহায়ত্বের মধ্যে রয়েছি। সহায়তার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
বাড়ির পাশ্ববর্তী এক ভাড়াটিয়া জানান, রোজিনা বেগম অত্যান্ত মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। আমরা তার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে যে যতটুকু পারছি সহযোগীতা করে যাচ্ছি। সরকারের ত্রাণ তহবিল হতে কিছু সহায়তা পেলে রোজিনা বেগম কিছুটা ভালো থাকতে পারতো বলে তারা জানান।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মাদ শহিদুল হক’র নিকট জানালে তিনি বলেন, কলাপাড়ায় এমন কোন অসহায় মানুষ থাকলে আমাকে জানাবেন। আমি নিজ দায়িত্বে খাবার পৌঁছে দিব। তিনি অসহায় রোজিনা’র বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন ও ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।