রাজশাহী

আক্কেলপুরে তুলসীগঙ্গা নদীর ভাঙ্গনে শ্মশান ও মন্দির হুমকিতে

  প্রতিনিধি ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৫:২০:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

আক্কেলপুরে তুলসীগঙ্গা নদীর ভাঙ্গনে শ্মশান ও মন্দির হুমকিতে

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার নবাবগঞ্জঘাট মহাশ্মশান, মন্দির ও সংলগ্ন দেবস্থান অবকাঠামো তুলসীগঙ্গা নদীতে যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

মহাশ্মশানের নদীর পাড়ে আরসিসি পাইলিং, রিটার্নিং ওয়াল ও ব্লক না থাকায় প্রতিবছর মন্দির ও শ্মশান প্রাঙ্গণ বন্যায় ও অতি বৃষ্টিতে ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জয়পুরহাট জেলার অধিনে তুলসীগঙ্গা নদী খননের কর্মযজ্ঞ চালায়, শ্মশানের পাড় ঘেষে নদী শাসন করার নামে খননের ফলে আরো বেশি ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে মহাশ্মশান।

এতে করে নদীর পানি একটু বারতি হতে না হতেই ভেঙে পড়ছে মহাশ্মশানের নদীর পাড়। আক্কেলপুর উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার সনাতন সম্প্রদায়ের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নবাবগঞ্জ ঘাট মহাশ্মশান, দেবস্থান ও সমাজ কল্যাণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক সুশীল কুমার আগরওয়ালা বলেন, ১৮১৬ সালে আক্কেলপুর উপজেলার শ্রী সুরতলাল চৌধুরী, শ্রী মহাদেব আগরওয়ালা, শ্রী ভীমরাজ আগরওয়ালা ও স্থানীয় মারোয়ারী সমিতির উদ্যোগে তুলসীগঙ্গা নদীর তীরে নবাবগঞ্জ ঘাটে সনাতন সম্প্রদায়ের মৃত ব্যক্তিদের দাহ, সমাধি ও সৎকাজের জন্য নিজেদের অর্থে ১১ বিঘা জমি শ্মশানের নামে দান করে।

সেই জমিতে বিভিন্ন দেবদেবীর মন্দির নির্মাণ করা হয়। প্রতিবছর এখানে দুর্গাপূজা, সন্যাস পুজা, কালি পুজা ছাড়াও অন্য দেবতাদের পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়াও এখানে সমাধির স্থান, পাকা চুল্লি ও বিশ্রামাগার বহু পুরানো ঐতিহ্য বাহী বট গাছ ও পাইকর গাছ রয়েছে। এই গাছের নীচে পথচারীরা বিশ্রাম করে, সৎকাজ করতে আসা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কীর্তন করেন। এই মহাশ্মশান সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে যথাক্রমে নিবন্ধন ও তালিকাভুক্ত সনদপত্র রয়েছে।

এই শ্মশান ও মন্দির বন্যা ও নদীন শাসনের কারণে তুলসীগঙ্গা নদীতে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। এমনকি শতবর্ষের পূর্বে লাগানো ঐতিহ্য বাহী বট গাছ ও পাইকর গাছের গোড়া থেকে মাটি ভঙ্গনের ফলে হুমকির মূখে। আক্কেলপুর-জয়পুরহাট সড়ক থেকে প্রায় দুইশ গজ দূরে মহাশ্মশানটি অবস্থিত। শ্মশানের এই সংকট ও দুর্ভোগ নিরসনে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েও আজও সুফল পাওয়া যায়নি।

ফলে তাদের মাঝে শঙ্কা বেড়েই চলেছে। তিনি আরো বলেন, আক্কেলপুর ও নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার কয়েক হাজার হিন্দু ও মারোয়ারী জনগোষ্ঠীর সবদেহ দাহ ও সমাধি দেয়ার একমাত্র জায়গা এই মহাশ্মশান। পানি উন্নয়ন বোর্ডে শ্মশান ও মন্দির রক্ষায় লিখিতভাবে বারবার আবেদন করা হয়েছে। এমনি জয়পুরহাট-০২ আসনের মহান জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে শ্মশান রক্ষার জন্য নদীর পাড়ে আরসিসি, পাইলিং, রিটার্নিং ওয়াল ও ব্লকের কাজ অতি সত্ত্বর টেন্ডারের মাধ্যমে শুরু করার জন্য ডিও লেটার দিয়েছেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের আক্কেলপুর উপজেলা শাখার সভাপতি এ্যাড. রাজেন্দ্র প্রসাদ আগরওয়ালা বলেন, শ্মশান, মন্দির ও সংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

আরও খবর

Sponsered content