দেশজুড়ে

অসুস্থ্ শরীরে পত্রিকা নিয়ে গ্রাহকদের দুয়ারে দুয়ারে বাদল

  প্রতিনিধি ১৭ জুন ২০২০ , ২:০১:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

মজিবুর রহমান, কেন্দুয়া : গুরুতর অসুস্থ শরীর নিয়ে এই সংকটময় সময়ে গ্রাহকদের কাছে পত্রিকা পৌঁছে দিচ্ছেন হকার বাদল মিয়া। গত (১০ মে) মঙ্গলবার পত্রিকা বিলিকালে কেন্দুয়া-আঠারবাড়ি সড়কের ফেনারগাতি  মোড়ে রাস্তা পারাবারের সময় দ্রুতগামী একটি সিএনজি তাকে ধাক্কা দেয়। সিএনজি’র ধাক্কা খেয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেন স্থানীয়রা। অভাবের তাড়নায় ক্ষত শরীর নিয়ে পত্রিকা হাতে আজও বের হতে হয়েছে তার।

গণমাধ্যমকর্মীদের বাদল মিয়া জানান, মঙ্গলবার বেলা ১০টার দিকে কেন্দুয়া-আঠারবাড়ী সড়কের ফেনারগাতী  মোড়ে পত্রিকা বিলি করতে রাস্তা পারাবারের সময় দ্রুতগ্রামী সিএনজি তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে চলে যায়। স্থানীয়রা  চেষ্টা করেও সিএনজিটিকে আটকাতে পারেনি। পরে তারা বাদল মিয়াকে উদ্ধার করে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেন। তার পায়ে ও হাতের বিভিন্ন স্থানে কেটে গেছে।

করোনার কারনে অনেক পত্রিকা বন্ধ রয়েছে। যেসব পত্রিকা চালু রয়েছে সেগুলো নিয়মিত পাঠকের হাতে ঝুঁকি নিয়ে পৌঁছে দিচ্ছি। সিএনজিটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। অর্থসংকটে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারছেন বলে জানান বাদল। এদিকে জীবিকা তাগিদে আহত অবস্থায় পত্রিকা নিয়ে গ্রাহকের দুয়ারে দুয়ারে ছুটেছেন তিনি। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ি রায়বাজারের বাসিন্দা বাদল মিয়া। ময়মনসিংহের পত্রিকা বিক্রয় জগতের এক কিংবদন্তি বাদল।

শিশুকাল থেকে আজো ( প্রায় ৪৫ বছর) আছেন এ পেশায়। প্রতিদিন ভোরে আঠারবাড়ি থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ময়মনসিংহ শহরে পৌঁছান। পত্রিকা নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জের সোহাগী থেকে শুরু হয়ে আঠারবাড়ি-রায়বাজার হয়ে কেন্দুয়া পৌরশহরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে পত্রিকা বিক্রয় করেন তিনি। বয়সের ভারে কিছুটা বাধ্যক্ষ দেখা দিলে ঝড়-বৃষ্টি কিংবা সাধারণ কোন অসুখ-বিসুখে তাকে ঘরে আটকিয়ে রাখতে পারেন না। ঝড়-বৃষ্টিতে পত্রিকা বিক্রয় করায় পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছিল ‘ঝড় বাদল’। মানুষ তাকে ঝড় বাদল বলে চিনে। বর্তমানে ডিজিটাল দুনিয়া। খেতে না পারলেও ভাল মানের একটি মুটোফোন আছে সবার হাতে। এক্ষেত্রেও বাদল মিয়া ব্যতিক্রম। সময় বাঁচানোর প্রয়োজনে আজো সে মোবাইল ব্যবহার করেন না।

পত্রিকা বিক্রয় করতে গিয়ে সম্প্রতি আরো কয়েকবার সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন তিনি। একবার পা ভেঙে বহুদিন ভূগছিল বাদল। তার পরেও থেমে নেই এই পত্রিকা বিক্রয়ের পথচলা। বাদল বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অনেক পত্রিকা বন্ধ কিছু সংখ্যক প্রকাশ হচ্ছে। এই গুলো বিক্রি করে টানাপোড়ন সংসার চলে না। এখন পত্রিকা কম ইনকামও কম। এ অবস্থায় শরীরের চিকিৎসা খরচ জোগানো ও সংসারে চাহিদা মেটানো তার পক্ষে কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে বলে জানায় বাদল। তার এই দু’সময়ে সমাজের দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগীতা কমানা করছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by