বাংলাদেশ

উপাত্ত আইনে সুরক্ষার চেয়ে নিয়ন্ত্রণমূলক বেশি

  প্রতিনিধি ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৫:১১:১০ প্রিন্ট সংস্করণ

উপাত্ত আইনে সুরক্ষার চেয়ে নিয়ন্ত্রণমূলক বেশি

সর্বশেষ প্রকাশিত উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২৩ এর খসড়াটি এখনো ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার চেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণমূলক বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এখনো উদ্বেগের অনেক জায়গা রয়েছে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘খসড়া উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২৩-এর ত্রুটিপূর্ণ বিধানসমূহের ওপর পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, খসড়ায় ব্যক্তিগত তথ্যের সংজ্ঞা পরিষ্কার নয়। ক্ষমতা থাকলেই কোনটাকে ব্যক্তিগত বলব আর কোনটাকে বলব না, সেই এখতিয়ার যেন আইনে না দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত তথ্যের সংজ্ঞা স্পষ্ট থাকতে হবে। নয়তো অপব্যবহার ও উদ্দেশ্যমূলক ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রস্তাবিত খসড়ায় উপাত্ত সুরক্ষা বোর্ড গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এ বোর্ড সরকারই গঠন করবে। এই বোর্ড সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হতে হবে।

তিনি বলেন, সরকারের হাতেই যদি নিয়ন্ত্রণ থাকে, তাহলে সরকার যখন ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার করবে, যা অসম্ভব নয়, তখন পরিত্রাণ পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। কারণ, কর্তৃত্ব সরকারের হাতেই থাকবে। এটা স্বার্থের দ্বন্দ্ব।

প্রস্তাবিত এ আইনের নাম পরিবর্তন করে ‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন ২০১৩’ করা হয়েছে, যেটি ১৮ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যাচাই বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বেশ কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম। 

তিনি বলেন, আমরা খসড়া আইনের উদ্দেশ্য ক্লজে মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরার বিধান অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছিলাম। আমরা আনন্দিত যে আমাদের সুপারিশ আংশিকভাবে গৃহীত হয়েছে। আমাদের সুপারিশের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন আশা করি। আমরা উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২৩ এই নামের পরিবর্তে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন ২০২৩ করার পরামর্শ দিচ্ছি। ব্যক্তিগত উপাত্তের সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ আমরা করেছিলাম। দুঃখজনক যে এই আইনটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষার আইন হলেও ব্যক্তিগত উপাত্তের একটি অর্থবহ সংজ্ঞা এই আইনে এখনো অন্তর্ভুক্ত হয়নি। টিআইবি বেনামি এবং ছদ্মনামযুক্ত উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য করার পরামর্শ দিয়েছিল যা এখনো বিদ্যমান।

তিনি আরও বলেন, নতুন এই আইন প্রতিপালনের চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় আন্তর্জাতিক চর্চা অনুযায়ী আইনটি পাশের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য অন্তত দুই বছর গ্রেস পিরিয়ডের সুপারিশ আগের খসড়ায় থাকলেও নতুনটিতে নেই। আমরা অনুরূপ বিধান পুনঃসংযোজনের সুপারিশ করছি। খসড়াটিতে ডেটা সাবজেক্টের একটি পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ আমরা করেছিলাম, কিন্তু আমলে নেওয়া হয়নি।

শেখ মনজুর-ই-আলম বলেন, আমরা আগেই বলেছি যে উপাত্ত সুরক্ষা আইন কেবল প্রাকৃতিক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিন্তু খসড়া আইনে তার প্রতিফলন নেই। সংজ্ঞা ধারা পুনর্গঠনের জন্য আমাদের সুপারিশ যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। আমরা এর যথার্থ বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই।

খসড়ার পর্যালোচনা পর্ব উপস্থাপন করেন টিআইবির ডেটা প্রোটেকশন অফিসার তরিকুল ইসলাম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা সুমাইয়া খায়ের।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by