বাংলাদেশ

একজন শ্রমিক সারা দিন কাজ করে ২০ কেজি চাল কিনতে পারে: তথ্যমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ৮ মার্চ ২০২২ , ৬:৫৯:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

দেশের প্রতিটি মানুষ আগের চেয়ে ভালো আছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় গত ১৩ বছরে সাড়ে ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ১৫ বছর আগে সারা দিন কাজ করে একজন শ্রমিকের পক্ষে ৩-৪ কেজি চাল কেনা সম্ভব ছিল না। এখন একজন শ্রমিক সারা দিন কাজ করে ১২ থেকে ২০ কেজি চাল কিনতে পারে। মোটা চাল, মোটা চালের কেজি ৪০-৪১ টাকা। অন্যান্যদের ক্রয় ক্ষমতা দ্বিগুণের বেশি, অনেক ক্ষেত্রে ৩ গুণের কাছাকাছি বৃদ্ধি পেয়েছে। নারী প্রগতির মাধ্যমে যে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এটি তার সুফল।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

‘দেশে নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশে কোনো মানুষ না খেয়ে থাকে না। কোথায় অনুসন্ধান করে পেলেন দেশে নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে, সে প্রশ্ন আমার। সন্ধ্যার পরে কিংবা ভরদুপুরে ঢাকা বা অন্য শহরের অলিতে-গলিতে, গ্রাম-গ্রামান্তরে ডাক শোনা যায় না ‘মা আমাকে একটু বাসি ভাত দেন’। কেউ যদি কাউকে বাসি ভাত দেয়, তাহলে সেই বাসি ভাত মুখে ছুড়ে মারার সম্ভাবনা আছে। কারণ বাসি ভাতের সমস্যা আমাদের নেই।

এক মুষ্ঠি চাল ভিক্ষা দেবেন সেই দিনও চলে গেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে কোনো মানুষ না খেয়ে নেই। বাংলাদেশের সমস্ত মানুষ আগের তুলনায় ভালো আছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা যখন ছিলেন, সারের দাবিতে মানুষ বিক্ষোভ করেছে, তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। কৃষকের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। শুধু তারা যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের উন্নয়ন হয়েছে, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ বলেন, দ্রব্যমূল্য করোনার কারণে এবং সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে সমগ্র পৃথিবীতে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশে কিছু কিছু পণ্যের দাম যে বৃদ্ধি পায়নি তা নয়। সরকার সেই পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছে। একইসঙ্গে যারা অসাধু ব্যবসায়ী, যারা দুর্যোগ-দুর্বিপাকের সুযোগ নিয়ে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয় তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কারণ কোনো দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া সৎ ব্যবসায়ীর কাজ না। আমি আশা করবো, সংকট না থাকলেও যারা করোনা কিংবা যুদ্ধের অজুহাতে পণ্যের মূল্য যারা ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের বলবো, এ ধরনের বিভ্রান্তি ছাড়াবেন না। আপনারা বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও তারেক জিয়ার শাস্তির মধ্যে আপনাদের রাজনীতিটা আটকে আছে। আপনারা সেখান থেকে রাজনীতিকে মুক্তি করুন।

পাকিস্তানের চেয়ে কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানকে সব সূচকে পেছনে ফেলেছি আমরা। মানব উন্নয়ন সূচক, সামাজিক সূচক, অর্থনৈতিক সূচক—সমস্ত সূচকে আমরা পেছনে ফেলেছি। এর অন্যতম কারণ আমাদের দেশের নারীরা শিক্ষিত এবং আমাদের দেশের নারীরা কর্মক্ষেত্রে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে। আরেকটি কারণ হলো, আমাদের দেশে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি। আমাদের এবং পাকিস্তানের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে দেশের অগ্রগতি হয়েছে, নারীর অগ্রগতি হয়েছে, এই অগ্রগতি আরও বেশি হতে পারেতো। নারীরা আরও এগিয়ে যেতে পারতো যদি অন্যান্য সরকারগুলো নারীর অগ্রগতির ক্ষেত্রে আরও জোরালো ভূমিকা রাখতো। খালেদা জিয়া যখন নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তার মন্ত্রিসভায় কজন নারী মন্ত্রী ছিলেন? তার মন্ত্রিসভার তার বড় বোন, আরেকজন ছাড়া আর কোনো নারী মন্ত্রী ছিল না। তখন কোনো নারী ডিসি-এসপি ছিল না। আজ নারীদের যেভাবে সমস্ত ক্ষেত্রে পদায়ন করা হচ্ছে, উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে, এই কাজগুলো বিএনপির সময় করা হয়নি। এরশাদ সাহেবের সময় এই কাজগুলো এভাবে করা হয়নি।

একজন কর্মজীবী নারী অফিসে কাজ করেন। আবার যখন ঘরে ফিরে আসেন তখন তিনি রান্নাঘরের খবর রাখেন, বাচ্চার খবর রাখেন। বাচ্চা বড় হয়ে গেলে স্কুল থেকে এসেছে কি না খেয়েছে কি না সেই খবর রাখেন। আবার স্বামীরও খবর রাখেন। স্বামী অফিস থেকে এসে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এক কাপ চা নিয়ে বসেন অথবা একটু শরীরটা এলিয়ে দিয়ে রেস্ট নেন। অনেক ক্ষেত্রে কর্মজীবী নারীর পক্ষে সেটা সম্ভব হয় না। আমার পরিবার থেকেও দেখে এসেছি। এটা বাস্তবতা। এভাবে পৃথিবীর বেশিরভাগ কাজ নারীরাই করেন। এ জন্য নারীর উন্নয়ন অগ্রগতির মধ্যে দেশের উন্নয়ন, সমাজের উন্নয়ন, সমাজের অগ্রগতি নির্ভরশীল, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by