বিভিন্ন হাসপাতালের কোভিড মোকাবিলায় বরাদ্দ ব্যয়ে দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে। করোনা মহামারির গত চার মাসে ৫টি হাসপাতালের ক্রয়, শ্রমিক নিয়োগ ও কোয়ারেন্টাইন বাবদ ৫ কোটি টাকার দুর্নীতি তথ্য মিলেছে।

মঙ্গলবার ‘করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলা: কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সভাপতি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন। সংস্থাটির রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি রিসার্চ ফেলো মো. জুলকারনাইন গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন। চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে গবেষণাপত্র তৈরি করা হয়েছে।

টিআইবির গবেষণা বলছে, বিভিন্ন হাসপাতালের কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বরাদ্দ ব্যয়ে দুর্নীতি অব্যাহত: ৫টি হাসপাতালে ক্রয়, শ্রমিক নিয়োগ ও কোয়ারেন্টাইন বাবদ ৬২ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ের বিপরীতে ৫ কোটি টাকা দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। যার মধ্যে রয়েছে, ক্রয় বিধি লঙ্ঘন করে এক লাখ কিট ক্রয়; দর প্রস্তাব মূল্যায়ন, আনুষ্ঠানিক দর-কষাকষি, কার্য সম্পাদন চুক্তি, কার্যাদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধি লঙ্ঘন ও অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে ক্রয়াদেশ দেওয়া।

কোভিড-১৯ টিকা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয় বিধি অনুসরণ করা হয়নি বলে মনে টিআইবি। কারণ হিসেবে টিআইবির ব্যাখ্যায় বলা হয়, টিকা ক্রয় পরিকল্পনা ও চুক্তি সম্পাদন নোটিশ সিপিটিউ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি এবং একটি উৎস থেকে ক্রয়ের ক্ষেত্রে দর-কষাকষির নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধে বিজ্ঞানভিত্তিক ও পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা, নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় প্রণোদনা বিতরণে যথাযথ উদ্যোগের ঘাটতিসহ সমন্বয়হীনতা, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমেও সুশাসনের প্রতিটি নির্দেশকে ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে। আইনের লঙ্ঘন করে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় টিকা আমদানির মাধ্যমে জনগণের টাকা হতে তৃতীয় পক্ষের লাভবান হওয়া সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কৌশলগত ঘাটতি, ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর প্রভাব ও রাজনৈতিক বিবেচনায় টিকা ক্রয়ের ক্ষেত্রে একক উৎসের ওপর নির্ভর করার কারণে চলমান টিকা কার্যক্রমে আকস্মিক স্থবিরতা নেমে এসেছে।