দেশজুড়ে

জমে উঠছে গাবতলী গরুর হাট, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলছে কেনাকেটা

  প্রতিনিধি ১৭ জুলাই ২০২১ , ৮:২৬:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

এস এম বাবুল:

কুরবানীর পশু বেচাকেনার প্রথম দিনেই জমজমাট ছিল ঢাকার পুরানো ও ঐতিহ্যবাহী গরুর হাট গাফতলীর স্থায়ী পশুর হাট। শনিবার হাট বসার নির্দেশনা থাকলেও আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গরু-ছাগলে ভরে যায় এ হাট।

স্থায়ী হাট হওয়ায় শনিবারের আগেও কেনাবেচা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা থেকে দশটি গরু এনেছিলেন শাহাজাহান মিয়া শুক্রবারে দুটি ও শনিবারে তিনটি গরু বিক্রি করছেন তিনি।
শনিবার সরেজমিনে হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটের নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়িয়ে পাশের ইট, বালু, পাথর ও কয়লার মাঠে হাটের পরিধি গড়িয়েছে। হাটে ভারতীয় কিছু গরু চোখে পড়লেও সংখ্যায় ছিল কম।

ভারতীয় গরু আনা ব্যবসায়ীর কাছে গরুর বিষয় জানতে চাওয়া হলে চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ী আলম জানান, গত বছরের কিছু গরু অবিক্রিত ছিল তাছাড়া গ্রাম থেকে কিছু গরু কিনে আনা হয়েছে।

হাটের প্রায় সর্বোত্র গাদাগাদি করে গরু রাখা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা সঠিক ভাবে মানা হয়নি। তাছাড়া গরু রাখার যে দুরত্বের কথা বলা হয়েছিল তা মানা হয়নি। দু’সারির গরুর মাঝ দিয়ে হেটে যাওয়া কষ্টকর। গরু ব্যবসায়ী ও তাদের সাথে থাকা শ্রমিকদের কারো মুখে মাস্ক নেই, নেই সামাজিক দুরত্বের বালাই। মুখে মাস্কের কথা বলতেই নানা অজুহাত দাঁড় করালেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে গরু নিয়ে আসা আনারুল হক। গরমে মুখ ভিজে যায়, নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয় বলে পকেট থেকে মাস্ক বের করে মুখে পরে নিলেন।

মূল হাটে গরু রাখার জায়গাা না থাকায় ইট, বালু, পাথর ও কয়লার মাঠে একফুট দুরত্বে বাঁশ পুতে প্রতিটি বাঁশে গরু বাধার জন্য এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। এতে বেপারিদের খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারা গাদাগাদি করে গরু রাখছে। এ প্রসঙ্গে গরু ব্যবসায়ী ইসরাফিল মিয়া বলেন, এমনিতে ট্রাক ভাড়া বেশি তারপর হাটে অতিরিক্ত খরচ হওয়ায় গরুর দাম বেড়ে গেছে। তাছাড়া গতবারের তুলনায় এবার মাংসের দাম বেশি হওয়ায় গরুর দাম ও আগের থেকে একটু বেশি।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের স্থায়ী এ হাটে শক্তি ফাউন্ডেশনের কর্মীরা সার্জিকাল মাস্ক বিতরণ করছে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পরামর্শ দিচ্ছে এর পাশাপাশি ব্র্যাকের করোনা সুরক্ষা কর্নারের মাধ্যমে করোনা টেষ্ট ও সংস্থাটির কর্মীরা কাপড়ের মাস্ক বিতরণ করছে।  করোনা সুরক্ষা কর্নারের টেকনোলজিষ্ট রফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার একজনেরই করোনা

টেষ্ট করানো হয়েছে। তবে ল্যাব থেকে ওই রিপোর্টটি নেগেটিভ এসেছে। ঐতিহ্যবাহি এ হাটে জাল টাকা শনাক্তের মেশিন দেখা গেলেও গবাদি পশুর ডাক্তারের দেখা মেলেনি। শনিবার ওই হাটে দুইটি বড় আকারের ও একটি ছোট আকারের গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে ভুক্তভোগি ব্যবসায়ীরা ডাক্তারের খোঁজ পাননি বলে অভিযোগ করছেন।

তবে ডিএমপি দারুস সালাম থানার উদ্যেগে জাল টাকা শনাক্তে মেশিন বসানো হয়েছে। মেশিনের দায়িত্বে থাকা এসআই রিয়াজ জানান, বিকেল চারটা নাগাদ যে টাকা শনাক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে কোন জাল টাকা পাওয়া যায় নাই।  প্রতিবছরের ন্যায় এবারও গাফতলীর হাটে বড় গরুর সংখ্যা বেশি। অন্য বছরের তুলনায় দাম ও বেশি জানালেন, শাহআলী থেকে গরু কিনতে আসা শফিউদ্দিন।
দামের বিষয় কথা হয় গরুর পুরানো ব্যবসায়ী সুমন মিয়ার সাথে ভোরের দর্পণকে তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর গরুর দাম একটু বেশি। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি আরো জানান, এ হাট ঈদ যত ঘনিয়ে আসে বেচাকেনাও তত বেশি হয়। এ কারনে অনেক ব্যবসায়ী সময় হাতে থাকায় বেশি বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by