আন্তর্জাতিক

তেলে নিষেধাজ্ঞা দিলে গ্যাস বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি রাশিয়ার

  প্রতিনিধি ৮ মার্চ ২০২২ , ৩:৩২:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

গ্যাস সরবরাহ করতে গ্যাস পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম -১ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। ছবি : এএফপি

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

পশ্চিমারা রাশিয়ার তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলে জার্মানিতে প্রধান গ্যাস পাইপলাইন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে মস্কো। 

রুশ উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক বলেছেন, রাশিয়ার তেল আমদানি করতে কোনো ধরনের অস্বীকৃতি বিশ্ববাজারের জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনবে।

ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে রাশিয়াকে আরও চাপে ফেলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সাথে নিয়ে মস্কোর তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। তবে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস এ ধরনের পরিকল্পনা প্রত্যাখান করেছে।

এরই মধ্যে বিশ্ব বাজারে ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ১৩০ ডলারে পৌঁছেছে। রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ হলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম দ্বিগুণের বেশি হয়ে প্রতি ব্যারেল ৩০০ মার্কিন ডলারে গিয়ে ঠেকবে বলেও সতর্ক করেছেন রুশ উপপ্রধানমন্ত্রী।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জোটের দেশগুলো তাদের মোট চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ গ্যাস ও ৩০ শতাংশ তেল আমদানি করে রাশিয়া থেকে। রাশিয়ার তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হলে ইউরোপের হাতে সহজ কোনো বিকল্প নেই।

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে আলেকজান্ডার নোভাক বলেন, ইউরোপের বাজারের জন্য রাশিয়ার তেলের বিকল্প খুব দ্রুত বের করা অসম্ভব। এটা করতে বছরের পর বছর সময় লাগবে এবং ইউরোপের ক্রেতাদের চড়া মূল্যে তেল কিনতে হবে। শেষ পর্যন্ত ইউরোপ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এদিকে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করতে নর্ড স্ট্রিম ২ নামের নতুন একটি গ্যাস পাইপলাইন জার্মানি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু এর মধ্যে রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালালে জার্মানি অনুমোদন স্থগিত করে।

নোভাক বলেন, তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলে প্রতিশোধ নেওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সমঅধিকার আমাদেরও আছে এবং বিদ্যমান নর্ড স্ট্রিম ১ গ্যাস পাইপ দিয়ে গ্যাস সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা দেব আমরা।

তিনি আরো বলেন, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ইতোমধ্যে রাশিয়ার কোম্পানিগুলোর ওপর পড়তে শুরু করেছে। তবে চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া এখনও ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।

বিশ্বে প্রাকৃতিক গ্যাসের সবচেয়ে বড় উৎপাদক দেশ রাশিয়া। এছাড়া দেশটি অপরিশোধিত (ক্রুড ওয়েল) জ্বালানি তেলের দ্বিতীয় বৃহৎ উৎপাদক। ফলে রাশিয়ার জ্বালানি খাতের ওপর যেকোনো নিষেধাজ্ঞা দেশটির অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এদিকে মিত্রদের ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে রাশিয়ার তেলের ওপর অবরোধ আরোপ করতে পারে। যদিও সেদেশে রাশিয়া থেকে মাত্র ৩ শতাংশ তেল আমদানি করা হয়।

রাশিয়া বলছে, পশ্চিমা দেশগুলো চাইলে জ্বালানি খাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। কিন্তু এতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে। বিনিয়োগকারীদেরও শঙ্কা সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার। আর এমন শঙ্কায় গতকাল সোমবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম একপর্যায়ে ব্যারেলপ্রতি ১৩৯ ডলার পর্যন্ত উঠেছিল, যা ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। যুক্তরাজ্যেও পেট্রলের গড় দাম লিটার প্রতি ১৫৫ পেনিতে পৌঁছেছে, যা রেকর্ড। -বিবিসি

আরও খবর

Sponsered content

Powered by