চট্টগ্রাম

দল ও মেয়র পদ থেকে বিদায় নেব : কাদের মির্জা

  প্রতিনিধি ১৩ জুন ২০২১ , ৯:২১:০১ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এমন আভাস পেয়ে নিজেই আওয়ামী লীগ ও মেয়র পদ থেকে বিদায় নেওয়ার ঘোষাণা দিয়েছেন তিনি। আজ রোববার দুপুর ১২টায় নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে এ ঘোষণা দেন মির্জা কাদের।

লাইভে মির্জা কাদের বলেন, ‘আজকে আমার জীবনে হয়তো জনপ্রতিনিধি বা পৌরসভার মেয়র হিসেবে শেষ কর্মদিবস। এ জন্য দাপ্তরিক কাজ শেষ করার উদ্দেশ্যে অফিসের সকল ফাইল সই করে দিয়েছি। আজ সকাল ৯টার দিকে মোবাইলে একটা কল পেয়েছি। নোয়াখালীর একজন ত্যাগী নেতা আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে, নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে নাকি বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছে! বড়ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উনাকে বলেছেন, তিনি (ওবায়দুল কাদের) গতকালকে (শনিবার) নাকি আমাকে বহিষ্কারের জন্য নেত্রীকে অনুরোধ করেছেন। এরপর নেত্রী নাকি ওই নির্দেশ দিয়েছেন।’

বসুরহাট পৌর মেয়র বলেন, ‘আমি খবর নিয়ে জেনেছি ওবায়দুল কাদের নেত্রীকে বলেছেন, আমাকে (ওবায়দুল কাদের) দলীয় দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিন। আমি এভাবে দল ও সরকারি দায়িত্ব পালন করতে পারব না। ছোটভাই কাদের মির্জা আমাকে (ওবায়দুল কাদের) এবং আমার পরিবারকে অপমান করেছে। আর কত অপমান সইব। নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেটা তোমার পারিবারিক বিষয়, তুমি দেখ। এখন তিনি মিথ্যাচার করছেন আমাকে (কাদের মির্জা) নাকি নেত্রী বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছে। সকালে এ কথা জানার পর আমি পৌরসভার দাপ্তরিক সকল ফাইলে দস্তখত দিয়ে শেষ করেছি। নেত্রীর নির্দেশ পেলে দল এবং পৌরসভার পদ থেকে বিদায় নেব। নেত্রী ব্যস্ত মানুষ তিনি হয়তো সময় পাবেন না, তবে সঙ্গে যারা থাকেন তাদের কেউ আমাকে মেসেজ দিলেও হবে।’

মির্জা কাদের আরও বলেন, ‘দল থেকে বিদায় নিলেও পৌরসভায় একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের অফিস করেছি। বহিষ্কারের পর সেখানে বাধা দিলে বা বসতে না দিলে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে গিয়ে শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের জয়গান গাইব। ওবায়দুল কাদেরকে আমি কিসের অপমান করেছি? তার সাথে দেখা করেছি, বললেন শান্ত থাক। এর দুদিন পর উনার ভাগিনার নেতৃত্বে আমার নয়জন ছেলেকে গুলি করা হলো। কোনো বিচার পাইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি কেন? কোম্পানীগঞ্জের একটা পাগলও বলবে গত পাঁচমাস এখানকার অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য ওবায়দুল কাদেরই দায়ী। আমি এটা বলা অপরাধ হলে আমাকে বহিষ্কার করে দিন। আমার নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত হামলার শিকার হচ্ছে আমি লোকজনকে কতো শান্ত করে রাখব। আমার সাথে যত ওয়াদা করেছেন একটা ওয়াদাও পালন করেননি ওবায়দুল কাদের। আপনার (ওবায়দুল কাদের) বউয়ের কিচ্ছা আবুল ফজল (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি) লিখলেও শেষ করতে পারবে না। তিনি (ইসরাতুন্নেছা কাদের) কোথায় কোথায় রাত্রে থাকেন, দেশের বাইরে গিয়ে কোন কোন দেশে কি কি করেন সব আমি জানি। সেটা পরে আরেকদিন বলবো।’

কাদের মির্জা বড়ভাই ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে মির্জা কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে আপনি যাদেরকে নমিনেশন দেন তারা কে কি করে তাদের সেই চেহারাটা কি আপনি দেখেছেন? যাদের কোনো অতীত নেই, তাদেরকেই নমিনেশন দেন আপনি।’

এ সময় কোম্পানীগঞ্জে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদে নিজের ঘোষিত ৮টি ইউনিয়নে প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন কাদের মির্জা। তিনি বলেন, ‘এ ঘোষণা দেবেন একমাত্র দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা।’ তিনি যাদেরকে মনোনয়ন দেবেন তারা যদি যোগ্য হয়, তাহলে তাদের পক্ষে কাজ করবেন তিনি।

এদিকে বহিষ্কার হলে পৌরসভার পরবর্তী উপনির্বাচনে আবারও দাঁড়িয়ে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করবেন বলেও জানান আলোচিত এ মেয়র। যদিও এর আগে স্থানীয় সরকারের আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে দলের ভেতরের নানা কথা বলে আলোচিত ও সমালোচিত হন কাদের মির্জা। পরে গত ৩১ মার্চ ফেসবুকে দলের সাধারণ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণাও দেন তিনি। এরপর আবার তিনি দাবি করেন দলের হাইকমান্ড তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি তাই তিনি আবারও দলো ফিরে এসেছেন মির্জা কাদের।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by