বাংলাদেশ

পার্লামেন্টে শক্তিশালী বিরোধী দল নাই আ.লীগের কারণে: মির্জা ফখরুল

  প্রতিনিধি ১৬ এপ্রিল ২০২২ , ৪:১১:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আক্ষেপ যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী সরকারের ‘দমন-নিপীড়নমূলক’ নানা কর্মকাণ্ডের জন্যই সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল নেই।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে বৈঠকের কথা জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এ সমস্ত কথা হল মূল বিষয়কে এড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা; আর কিছু না। শক্তিশালী বিরোধী দল আছে বলেই তো আমরা আমাদের কথাগুলো বলছি। কিন্তু পার্লামেন্টে বিরোধী দল নাই তাদের কার্যকলাপের কারণে। তারা এ দেশে গণতন্ত্রের কোনো স্পেস, কোনো পরিসরই দেয়নি। সেই ডেমোক্রেটিক স্পেস না থাকলে একটা ফ্যাসিবাদি রাষ্ট্রের মধ্যে কোন ধরণের শক্তিশালী বিরোধী দল দেখতে চাচ্ছেন, আমরা ঠিক বুঝি না। ওনি যেহেতু চাচ্ছেন দেখতে অল্প সময়ের মধ্যেও সেটা দেখতে পাবেন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন,  যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যে চিত্র উঠে এসেছে তাতে বিএনপি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। প্রতিবেদনে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারচুপি, রাতে ভোট, ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর কথা বলা হয়েছে, যাতে ওই নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় এই জালিয়াত, অনির্বাচিত সরকারের অধীনে কখনও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের রিপোর্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, আইন-শৃংখলা বাহিনীর ভূমিকা, বিচার ব্যবস্থায় সরকারী হস্তক্ষেপ সম্পর্কে যে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে আলোচনা হয়।

তিনি বলেন,ফ্যাসীবাদী এই সরকারের মারাত্মক মানবাধিকার লংঘন, সরকারের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গুম, খুন, নির্যাতনের যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা এই রিপোর্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সেই সত্যকে আরও প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ফখরুল বলেন, বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড, আইন-শৃংখলা বাহিনীর হেফাজতে নির্মম নির্যাতনের ফলে হত্যাকাণ্ড, প্রতিবাদকারী ব্যক্তিদের পিতা-মাতা, ভাই-বোনদের গ্রেপ্তার, বিচার প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার, বিশেষ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া ও কারাগারে পাঠানোকে রাজনৈতিক প্রভাবিত বলে উল্লেখ করা প্রকৃত সত্যকে উদঘটিত করেছে।

 

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, সংবাদ কর্মীদের নির্যাতন এবং নিবর্তন মূলক আইন প্রণয়ন গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে। সভায় উল্লেখিত বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে প্রচারের মাধ্যমে জনমত গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

Powered by