দেশজুড়ে

বরিশালের গৌরনদীতে দলিল লেখকদের কর্মবিরতি ও মানববন্ধন

  বিশ্বজিত সরকার বিপ্লব ১২ মার্চ ২০২৪ , ৪:১৪:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশালের গৌরনদীতে দলিল লেখকদের কর্মবিরতি ও মানববন্ধন

দলিল লেখকদের আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখানো, তাদেরকে অপমান, অসম্মান করাসহ লেখকদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ অসদাচরণ করা ও তাদেরকে নানা প্রকার হুমকি, ধামকি দেওয়ার অভিযোগ এনে সোমবার সকালে বরিশালের গৌরনদীতে সদ্য যোগদানকারী খণ্ডকালীন উপজেলা সাব-রেজিস্টার সঞ্জয় বড়ালের অপসারণ চেয়ে তার বিরুদ্ধে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কলম বিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় দলিল লেখকরা।

ফলে বন্ধ হয়ে গেছে জমিজমার দলিল রেজিষ্টি কার্যক্রম। থমকে গেছে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার আয়। একই দাবিতে তারা ওইদিন বিকেলে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে। উপজেলা দলিল লেখক সমিতির আহ্বায়ক মো. কাওছার হোসেন ও সদস্য সচিব মো. কামাল উদ্দিন মিয়াসহ বিক্ষুব্ধ দলিল লেখকগণ অভিযোগ করেন ৬মার্চ বুধবার কর্মস্থলে যোগদান করেই খণ্ডকালীন উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার সঞ্জয় বড়াল তার সাথে পরিচিত হতে আসা দলিল লেখকগণের সাথে অসদাচরণ করেন।

এ সময় ওই সাব রেজিস্ট্রার ছাত্র জীবনে ছাত্র রাজনীতির অস্ত্রধারী ক্যাডার ছিলেন বলে নিজের পরিচয় দেন এবং দলিল লেখকদের নানা ভয় ভীতি দেখান। বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই দিনের কর্মদিবসে তিনি একাধিক দলিল লেখকের সাথে অসদাচরণ করেন। দলিলের ভুল ত্রুটি ধরে লেখকের গায়ে দলিল ছুড়ে মেরেছেন। অবাঞ্ছিত ভাষায় লেখকদেরকে অপমান করেছেন, তাদেরকে তুইতোকারি ভাষায় ডেকেছেন, কথায় কথায় দলিল লেখকদেরকে শো-কজ করা, বহিষ্কার করা বা সাইজ করার হুমকি দিয়েছেন।

ফলে স্থানীয় দলিল লেখকগণ ভীত ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।আতঙ্কিত দলিল লেখকগণ তার অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে তার অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। সাব রেজিষ্টারের অপসারণ চেয়ে উপজেলার সকল দলিল লেখকগণ রোববার সকাল ৮টা থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করছে। একই দাবিতে সোমবার বেলা ১১টায় সাব রেজিষ্টি অফিস চত্বরে তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এরপর ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় তারা সাব রেজিষ্টি অফিস চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে মিছিলটি নিয়ে উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে পুরো উপজেলা জুড়ে। সাধারণ মানুষের দৃষ্টি এখন এ ঘটনার দিকে। একজন সাব রেজিষ্টারের এহেন ধৃষ্টাতার রহস্য জানার আগ্রহের পাশাপাশি ঘটনার সমাপ্তি কীভাবে ঘটবে সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।নিজের বিরুদ্ধে আনা দলিল লেখকদের সকল অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার সঞ্জয় বড়াল বলেন, আমি আইন ও নিয়ম অনুযায়ী দলিল সম্পাদন করতে চাই।

কিন্তু দলিল লেখকদের তা পছন্দ নয়। তারা অনিয়মের মাধ্যমে দলিল সম্পাদন করতে না পেরে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু আব্দুল্লাহ খান বলেন, দলিল লেখকগণ একটি আবেদন নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদেরকে বলেছি একটি স্মারকলিপি দিতে। সেটি দিলে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দেব বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি।

Powered by