চট্টগ্রাম

কক্সবাজারে পর্যটকদের হয়রানির অভিযোগ

  প্রতিনিধি ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৫:২৩:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

তিনদিনের টানা ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নামায় হোটেল মোটেলগুলোতে ঠাঁই মিলছে না। অনেকেই হোটেলে কক্ষ ভাড়া না পেয়ে সমুদ্রসৈকত ও সড়কে পায়চারী করছেন। পর্যটকদের অভিযোগ, হোটেল থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ, যানবাহনসহ সবখানে বাড়তি ভাড়া ও অসদচারণের শিকার হওয়ার পাশাপাশি চরম হয়রানিতে পড়ছেন তারা। 

এসবের জন্য করোনা ও দালালচক্রকে দুষছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে পর্যটকদের হয়রানি নিরসন করা হবে বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের যেন মেলা বসেছে। সাপ্তাহিক ও একুশে ফেব্রুয়ারির টানা ৩ দিনের ছুটিতে তাদের পদচারণায় মুখর সাগরতীরসহ পর্যটন স্পটগুলো। সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে হোটেলে রুম ভাড়া না পেয়ে ব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে অবস্থান করছেন বালিয়াড়িতে। আবার অনেক পর্যটক অবস্থান করছেন সাগরতীরে। ভ্রমণে এসে অনেক পর্যটক হোটেল রুমের জন্য ঘুরছেন। কেউ চাচ্ছেন অতিরিক্ত ভাড়া। পর্যটকদের অভিযোগ, তারা হয়রানি শিকার হচ্ছেন।

সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে অবস্থান করা পর্যটক ইলিয়াছ উদ্দিন বলেন, হোটেলের রুম আগে বুকিং করেনি। হঠাৎ করে ৫ জনের একটি টিম কক্সবাজারের ছুটে এলাম। কিন্তু সকাল ৬ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত হোটেল মোটেল জোনে ঘুরে বেড়িয়েছি। কিন্তু কোনো রুম ভাড়া পায়নি। ফলে এখন সাগরের বালিয়াড়িতে অবস্থান করছি।

প্রধান সড়কস্থ সুগন্ধা পয়েন্টের মোড়ে অবস্থানকারি পর্যটক রায়হান কবির বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার হোটেল সানসেট রিসোর্টে ১২শ টাকায় রুম ভাড়া নিয়ে ছিলাম। কিন্তু শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রুম থেকে বের করে দিয়েছে। রুমের ভাড়া দ্বিগুণ দিতে চেয়েছিলাম তাও দেয়নি। পরে দেখলাম ১২’শ টাকার ওই রুম ৪ হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছে।’

পর্যটক শুক্কুর, কাইয়ুম ও ছৈয়দ বলেন, ‘সি ল্যান্ড গেস্ট হাউসে ১টি রুম ভাড়া চেয়েছিলাম। তারা একদিনের জন্য ৬ হাজার টাকা চেয়েছে। পরে অতিরিক্ত টাকায় রুম ভাড়া নিয়ে চলে আসি।’

এদিকে টানা ছুটিতে করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া ও হয়রানির জন্য দালালচক্রকে দুষছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

সি ল্যান্ড গেস্ট হাউসের ম্যানেজার জাহেদ বলেন, করোনার কারণে আমরা তো পুরো বছরই বসা ছিলাম। আর টানা ছুটির এই ২দিনে কি পুরো বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেল ম্যানেজার বলেন, কলাতলী থেকে শুরু সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মোড় পর্যন্ত কয়েকটি দালালচক্র রয়েছে। যারা এই টানা ছুটিকে কাজে লাগিয়ে অসাধু উপায়ে হোটেল মোটেল রিসোর্ট ও কটেজগুলোর সঙ্গে এই দালালচক্র জড়িত রয়েছে। তারাই পর্যটকদের হয়রানির পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।

এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সমুদ্র সৈকত ও সড়কগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশের অবস্থান দেখা গেলেও হোটেল মোটেল জোনে কোনো ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা প্রশাসনের লোকজন দেখা যায়নি।

আর ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. সাকের আহমদ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্ট, পর্যটন স্পট ও বালিয়াড়িতে ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। ফলে আগত পর্যটকরা নিরাপদে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের সাথে জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। সুতরাং যেখানে পর্যটকরা হয়রানির শিকার হবেন; অভিযোগ পাওয়া মাত্র সেখানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে সমন্বয় করে ট্যুরিস্ট পুলিশ পর্যটকদের হয়রানি নিরসনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুধু হোটেল ও বালিয়াড়ি নয় কিংবা সাগরতীর নয়; অনেক পর্যটক ইনানী, সেন্টমার্টিন, হিমছড়ি, রামুর রামকোট, পাতুয়ারটেক সৈকত দেখতেও ভিড় জমাচ্ছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by