দেশজুড়ে

বাগেরহাটে নৌকার ১২ নেতা-কর্মীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম

  প্রতিনিধি ৮ জানুয়ারি ২০২৪ , ৬:৩৬:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

বাগেরহাটে নৌকার ১২ নেতা-কর্মীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম

নির্বাচন পরবর্তী মোংলায় একের পর এক নৌকা প্রতীকের নেতা-কর্মীদেরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করছেন ঈগল প্রতীকের কর্মীরা। এতে গুরুতর আহত ১২জনের মধ্যে ১জনকে আশংকাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

রবিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও সোমবার সকালে পৌর শহরে পৃথক এ হামলায় আহতের ঘটনা ঘটে। উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন শেখ জানান, রবিবার (৭জানুয়ারী) ভোটের দিন নৌকার এজেন্ট থাকায় ওইদিন রাতে মাদুরপাল্টা গ্রামে ৭নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মানবেন্দ্র মল্লিক (৩৫) ও তার ভাই দিজেন্দ্র মল্লিক (৩৩)কে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন ঈগল প্রতীকের কর্মী সজল ও উজ্জল। এছাড়া একই সময়ে ওই ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামে ঈগলের কর্মীদের হামলায় আহত হন নৌকা প্রতীকের আরেক কর্মী সুমন শেখ (১৮)।  

সোনাইলতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন সরদার জানান, ভোট ঈগলে না দিয়ে নৌকায় দেয়ায় ভোটের দিন রবিবার রাতে ঈগল প্রতীকের কর্মীরা সোনাইলতা গ্রামের নৌকা প্রতীকের কর্মী রবিউল শেখ (৪২), জুবায়ের সরদার (২৩), নাজমুল সরদার (২৪), তফিম সরদার (৩৫) ও আজমল সরদার (৫৫)কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেন। তাদেরকে উদ্ধার করে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর আহতদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় নাজমুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

আওয়ামী লীগ নেতা কবির উদ্দিন ও হুমায়ুন সরদার বলেন, নৌকা জিতেও আমাদের নৌকার নেতা-কর্মীরা মার খাচ্ছেন। আমরা জিতলেও শান্ত রয়েছি, কিন্তুু ঈগলের লোকজন গায়ে পড়ে আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা আরো বলেন, গতরাতের এ ঘটনায় আজ সোমবার সকালে থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হবে, এখন তারই প্রস্তুতি চলছে। অপরদিকে সোমবার দুপুরে থানায় দায়েরকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌর শহরের শ্রমকল্যাণ সড়ক এলাকায় ঈগল প্রতীকের কর্মী মোঃ সাকিলসহ৫/৬সংঘবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রতীকের কর্মী আঃ সালাম মোল্লা, শিউলি, কুলসুম ও ফারুক বয়াতীর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীদের লাঠিসোঁটার মারপিটে নৌকার এই ৪কর্মী গুরুতর আহত হন। পরে আহতদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় আহতদের পক্ষ থেকে দুপুরেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ঘটনাকে ঘিরে পৌর শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

মুলত নির্বাচনের শুরু থেকেই বেপরোয়া ঈগল প্রতীকের কর্মীরা লাগাতারভাবে বিভিন্ন এলাকায় নৌকা প্রতীকের কর্মীদের মারপিটসহ নানা ধরণের উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। আর এসব ঘটনায় পুলিশের তেমন কোন ভূমিকা না থাকায় দিনকে দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ঈগলের কর্মীরা। 

একের পর এক নৌকার কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় প্রশাসনের আচরণ সন্দেহজনক উল্লেখ করে নৌকা প্রতীকের নির্বাচিত সাংসদ হাবিবুন নাহার বলেন, আমি আমার নেতা-কর্মীদেরকে ধৈর্য্য ধরতে বলেছি। কিন্তু তারা কতক্ষণ ধৈর্য্য ধরবে, আমি বুঝতে পারছিনা। পুলিশকে এসব ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে বলা হলেও তারা সেটি করছেন না। 

এ বিষয়ে মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে,এম আজিজুল ইসলাম বলেন, সাংসদ মহোদয় বলার পর আমরা সেভাবেই কাজ করছি। আর মারামারির ঘটনার অভিযোগের তদন্ত করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content