প্রতিনিধি ৭ আগস্ট ২০২১ , ৬:৪৭:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ
করোনা সংক্রমণ রোধে চলছে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ। ফলে গণপরিবহন বন্ধ আছে। তবু সাধারণ মানুষের চলাচল কোনোভাবেই আটকানো সম্ভব হচ্ছে না।
শনিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর গাবতলী ও আমিনবাজার এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়তই কর্মজীবী মানুষ রাজধানীতে ঢুকছে। দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ থাকলেও নানান উপায়ে হাজার হাজার কর্মজীবী মানুষ ঢাকায় আসছে আবার ঢাকা থেকে বের হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষ আমিনবাজারে নেমে পায়ে হেঁটে গাবতলী ব্রিজ পার হয়ে রাজধানীতে ঢুকছে। পায়ে হেঁটে আসাতে কোনো পুলিশি ঝামেলার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না কাউকে। আবার যারা রাজধানী থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন তাদের পোহাতে হচ্ছে নানা ধরনের ঝামেলা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রিকশা, প্রাইভেটকার, ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিকআপে মানুষ যাতায়াত করছে। আমিনবাজার থেকে সাভার যেতে রিকশা বা পিকআপে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়। যে যেভাবে পারছে, সেভাবে ভাড়া আদায় করছে।
লিয়াকত নামের এক মাইক্রোবাস চালক গাবতলী ব্রিজ পার হয়ে রাজশাহীর যাত্রী ডাকছেন। তার সঙ্গে কথা হয় । লিয়াকত বলেন, আমি গতকাল রাতে কিছু যাত্রী নিয়ে ঢাকায় এসেছিলাম। এখন আবার রাজশাহী যাব। এখানে যাত্রী নিতে দাঁড়িয়েছি। জনপ্রতি ভাড়া নিচ্ছি এক হাজার থেকে ১২শ টাকা।
তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় রাতেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাত্রী নিয়ে আমিনবাজার পর্যন্ত মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার আসছে। রাতে বা দিনে যাত্রী নিয়ে এলে রাস্তায় ঝামেলা করে না প্রশাসন।
শরিফুল নামের এক যাত্রী বলেন, আমার মা অসুস্থ। এজন্য বাড়ি যাচ্ছি। ফার্মগেট থেকে গাবতলী মোটরসাইকেলে এসেছি। এরপর হেঁটে গাবতলী ব্রিজ পার হয়েছি। এখন মাইক্রোবাস পেলাম। আমার কাছ থেকে ১২শ টাকা ভাড়া নিয়েছে। পরিবহন না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়ায় যেতে হচ্ছে।
মানিক নামের আরেক দিনমজুর এসেছেন পাবনা থেকে। তিনি বলেন, আমি ভবন নির্মাণে রডের কাজ করি। ঈদের আগে বাড়িতে গিয়েছি। এলাকায় কোনো কাজ পাইনি। তাই আবার ঢাকায় এলাম। একটি পণ্যবাহী ট্রাকে সাভার পর্যন্ত এসেছি। সাভার থেকে অটোতে আমিনবাজার হয়ে পায়ে হেঁটে গাবতলী এলাম। ভাড়া গেছে অনেক বেশি।
গাবতলী ব্রিজে মওদুদ নামের পুলিশের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বলেন, গাড়ি আসছে। তবে যারা অপ্রয়োজনীয় কাজে রাজধানীতে ঢোকার চেষ্টা করছে তাদের আটকানো হচ্ছে। এছাড়া আমিনবাজারের ওইদিক থেকে কোন অটো বা রিকশা গাবতলীতে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের ঘুরিয়ে দিচ্ছি। তবে যারা পায়ে হেঁটে আসছে তাদের কিছু বলা হচ্ছে না।
গত ৩ আগস্ট ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সচিবালয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ১১ আগস্ট থেকে দোকানপাট, শপিংমলসহ গণপরিবহন খুলে দেওয়ার পাশাপাশি সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেওয়া হবে।
এর আগে করোনার সংক্রমণ রোধে সব ধরনের অফিস বন্ধ রেখে গত ১ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করে সরকার। এরপর কোরবানির ঈদের আগে গত ১৫ জুলাই থেকে আট দিনের জন্য সব বিধিনিষেধ শিথিল করে দেওয়া হয়। পরে আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। এদিকে, গত ১ আগস্ট থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে রফতানিমুখী শিল্প ও কলকারখানা।